
বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যাকরণ অংশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে ভাব সম্প্রসারণ। যারা অনলাইনের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের এসব ভাব-সম্প্রসারণ পেতে চান তারা অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আপনারা আপনাদের প্রয়োজনীয় ভাব সম্প্রসারণ ডাউনলোড করতে পারবেন অথবা সরাসরি পড়তে পারবেন। আজকে আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ কে নিয়ে আলোচনা করব সেটি মূলত দশম একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ।
ভাব-সম্প্রসারণ টি হল, “দুর্নীতি জাতীয় জীবনের সকল উন্নতির অন্তরায়” অথবা দুর্নীতি জাতীয় জীবনের অভিশাপ স্বরূপ”।
বর্তমান সমাজে দুর্নীতি একটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশ আজ উন্নতির চরম শিখরে না পৌঁছানো একমাত্র কারণ হচ্ছে দুর্নীতি। আমাদের সমাজে এমন কোন জায়গা নাই যেখানে দুর্নীতি হয় না। নিম্ন থেকে উচ্চ পর্যায়ের সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি। তাই আমাদের সকলের উচিত এই দুর্নীতির রুখে দাঁড়ানো। আজ এই সম্পর্কে আমরা আমাদের ভাব সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে তুলে ধরব:
“দুর্নীতি জাতীয় জীবনের সকল উন্নতির অন্তরায়”
অথবা দুর্নীতি জাতীয় জীবনের অভিশাপ স্বরূপ”
মূলভাব: দুর্নীতি ঘৃণ্য অপরাধ এবং বর্তমানে তার সমাজের সর্বত্র বিরাজমান। দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে জাতি মুক্ত না হলে জাতির উন্নতি হবে সুদূর পরাহত। জাতির উন্নতির একমাত্র বাধাগ্রস্ত হলো দুর্নীতি।
সম্প্রসারিত ভাব: দুর্নীতি বলতে বোঝায় নীতিহীন অবস্থা। এ নীতিহীনতা ব্যক্তিজীবন থেকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে সর্বত্র আজ প্রসারিত। আর নীতিহীনতার সয়লাবে সুনীতি ও শুভ চেতনা পদে-পদে মার খাচ্ছে। দুর্নীতিই আজ নীতি, অশুভই আজ শুভ বলে স্বীকৃত। সামাজিক অবক্ষয়ের চরম সীমায় পৌঁছেছে আজ আমাদের গোটা জাতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। অফিস-আদালতে ঘুষ, সর্বত্র মিথ্যাচার, স্বার্থপরতা ও যেনতেনভাবে স্বার্থোদ্ধারের সীমাহীন লালসা। পরীক্ষায় নকল বাজি, শিক্ষকের দায়িত্ব ও অর্থলিপ্সা এবং সন্ত্রাস শিক্ষাঙ্গনের দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গেছে।
রাজনীতির নামে ক্ষমতার সিঁড়ি মারানো এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের তসরূপ দুর্নীতির রাষ্ট্রীয়করণ সম্পন্ন করেছে। কাজে ও কর্মে ভাষণেও তোষণে কোথায় নেই দুর্নীতি! যারা রক্ষক তারাই আজ ভক্ষক। ধর্মের নামে চলে অনাচার অধর্ম। সামাজিক সম্পর্ক ও প্রতিষ্ঠানসমূহ আজ ধসে পড়েছে। সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কবলে পড়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুর্নীতিপরায়ন দেশ হবার উপহাস কুড়িয়েছে। দুর্নীতির কারণেই দেশ কাঙ্ক্ষিত উন্নতি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
দুর্নীতি আমাদের দেশের একটি জাতীয় সমস্যা। রাষ্ট্রীয় স্তর থেকে শুরু করে পারিবারিক স্তর এমনকি ব্যক্তি জীবনে ঢুকে পড়েছে দুর্নীতি। দুর্নীতিবাজদের কালো থাবায় সমাজজীবন আজ অতিষ্ঠ। প্রতিবছর দুর্নীতির কারণে খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সবগুলো খাত থেকে ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এর ফলে জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের বিদেশের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয়, এর পেছনের প্রধান কারণ হচ্ছে আইনের শাসন ও জবাবদিহির অভাব। দুর্নীতিবাজেরা জনগণের টাকা মেরে পকেট ভরলেও তাদের কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না এবং শাস্তিও পেতে হয় না। দুর্নীতি দমন কমিশনের উচিত বিষয়টি বিবেচনায় এনে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত।
মন্তব্য: দুর্নীতি আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। দুর্নীতি থেকে মুক্তি পাওয়ার আশু কোন লক্ষণ আজও পরিলক্ষিত হয়নি। সরকারের একার পক্ষে দুর্নীতি রোধ করা কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের সকলেরই উচিত দুর্নীতিকে না বলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। যেখানেই দুর্নীতি দেখা যাবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশকে সামনের কাতারে নিয়ে যেতে হলে এখনই দুর্নীতিকে না বলতে হবে। দুর্নীতিকে রুখে দিতে হবে। তাহলেই দেশ এবং জাতি আরও উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যাবে।
আপনারা যারা বিভিন্ন ভাব-সম্প্রসারণ পেতে ইচ্ছুক তারা আজই আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমরা চেষ্টা করেছি এখানে প্রতিটা শ্রেণীর ভাব-সম্প্রসারণ গুলোকে তুলে ধরার। আজকে আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ নীতি নিয়ে আলোচনা করলাম তা অবশ্যই আপনারা বুঝতে পেরেছেন। আপনাদের উপরে নির্ভর করে আমাদের সফলতা। এরপরেও যদি আমাদের কোনো ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের নিজস্ব মতামত প্রদান করবেন। আপনাদের মতামত গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। আজ এ পর্যন্তই সবার সুস্থতা কামনা করি।
Leave a Reply