
ই পাসপোর্ট বাংলাদেশের পাসপোর্ট সেবার জগতে নতুন একটি সংযোজন। আগে যেসব পাসপোর্ট ইস্যু করা হতো সেগুলোকে বলা হতো এম.আর. পি। এই এম.আর.পি এর পূর্ণরূপ হলো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। কিন্তু এই পাসপোর্ট এ সুরক্ষার দিক থেকে বেশ কিছু ঘাটতি ছিলো। তাই বাংলাদেশ সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে পুরোদমে ই পাসপোর্ট সেবা চালু করে।
বাংলাদেশ সরকার দেশের সকল মানুষের জন্য পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি জেলায়, জেলা পাসপোর্ট অফিস স্থাপন করেছে। এই সকল পাসপোর্ট অফিসেই এখন ই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব। ই পাসপোর্ট পেতে হলে আলাদা কোন বিশেষায়িত পাসপোর্ট অফিসের প্রয়োজন নেই, দেশের প্রত্যেকটি পাসপোর্ট অফিসেই এখন ই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব। ই পাসপোর্ট এর ফি ও রাখা হয়েছে আগের এম. আর. পি পাসপোর্ট এর মতই। সরকারের ইচ্ছা হলো আগামী দিনে দেশের সকল পাসপোর্টধারীই হবে ই পাসপোর্টধারী।
ই পাসপোর্ট পেতে হলে প্রথমেই আবেদনকারীকে ই পাসপোর্টের আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে তা পূরণ করতে হবে। এই আবেদন ফরম যেকোন পাসপোর্ট অফিস অথবা অনলাইনে পাওয়া যাবে। ফরম পূরণ হয়ে গেলে তারপর নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হবে নিকটস্থ যেকোন ব্যাংকে। তবে টাকা জমা দিতে হবে চালানের মাধ্যমে। টাকার পরিমাণ নির্ধারিত হবে পাসপোর্ট এর পাতার সংখ্যা, মেয়াদ ও ডেলিভারির ওপর। এই টাকার পরিমাণ ৪,০০০ টাকা থেকে প্রায় ১৪,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
যেমন ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ফি প্রদান করতে হবে ৪,০২৫ টাকা, ৬,৩২৫ টাকা ও ৮,৬২৫ টাকা যথাক্রমে নিয়মিত, জরুরী ও অতি জরুরী পাসপোর্ট সেবার জন্য। নিয়মিত ডেলিভারিতে পাসপোর্ট পেতে সময় লাগবে ১৫ কার্যদিবস, জরুরী পাসপোর্ট পেতে সময় লাগবে ৭ কার্যদিবস ও ২ কার্যদিবসের মধ্যে অতি জরুরী পাসপোর্ট পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সরকার ৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ও প্রদান করে থাকে। এই পাসপোর্ট পেতে ফি প্রদান করতে হয় ৬,৩২৫ টাকা, ৮,৩২৫ টাকা ও ১২,০৭৫ টাকা। এই ফি গুলো প্রদান করতে হয় যথাক্রমে নিয়মিত, জরুরী ও অতি জরুরী সেবার জন্য।
১০ বছরের ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট এর জন্য গুণতে হবে আবেদনকারীকে ৫,৭৫০ টাকা, ৮,০৫০ টাকা এবং ১০,৩৫০ টাকা যথাক্রমে নিয়মিত, জরুরী ও অতি জরুরী পাসপোর্ট সেবার জন্য। ১০ বছরের ৬৪ পাতার পাসপোর্ট এর জন্য খরচ হবে ৮,০৫০ টাকা নিয়মিত ডেলিভারিতে পেতে। জরুরী সেবায় এই পাসপোর্ট পেতে গুণতে হবে ১০,৩৫০ টাকা। অতি জরুরী সেবায় এই পাসপোর্ট এর ফি হলো ১৩,৮০০ টাকা।
পাসপোর্ট এর ফি সাধারণত খুব একটা পরিবর্তন করা হয় না। এই ফি এর টাকার পরিমাণ পাসপোর্ট এর আবেদন এর ওয়েবসাইটেও দেয়া আছে। এই ফি এর বাইরে আর কোন টাকার প্রয়োজন নেই পাসপোর্ট এর আবেদন করতে। আমরা অনেক সময় খেয়াল করেছি যে, পাসপোর্ট অফিসে গেলে দালালরা বেশি টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট বাসায় পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গিকার করে থাকে। এই সকল দালাল থেকে সাবধানে থাকতে হবে এবংঅনে রাখতে হবে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে সঠিক তথ্য প্রমাণ দেওয়া হলে ও ফি পরিশোধ করে দিলে খুব সহজেই পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
অনেক সময় দালালরা ভয় দেখায় যে, অতিরিক্ত টাকা না দিলে পুলিশ ভ্যারিফিকেশন এ সমস্যা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসবে কান দিবেন না, এইসব দালালেরা প্রতারক ছাড়া আর কিছুই না। সঠিক তথ্য প্রমাণ যদি আবেদন ফরমে দেওয়া হক্যে থাকে তবে পুলিশ ভ্যারিফিকেশনেও আর কোন সমস্যা হবে না। আর যারা অতি জরুরী সেবায় পাসপোর্ট নিতে চান তাদের আগেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে নিকটস্থ থানায়।
Leave a Reply