ভাব সম্প্রসারণ: হিংসা যেদিন যাইবে দুনিয়া ছাড়িয়া, সব তরবারি হইবে সেদিন কাষ্ঠের তরবারি Hingsha Jedin Jaibe Dunia Chariya Sob Torbari Hoibe Sedin Kasther Torbari

2/5 - (1 vote)

আপনারা যারা অনলাইনে বাংলা ব্যাকরণ এর ভাব সম্প্রসারণ খুজতেছেন তাদের জন্য আমাদের এই শিক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট এ আপনাদের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার ভাব সম্প্রসারণ আমরা এখানে তুলে ধরেছি। এখানে আপনারা আপনাদের প্রয়োজন মত ভাব সম্প্রসারণ গুলো দেখে নিতে পারেন, ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

আমাদের এই ওয়েবসাইটে মূলত শিক্ষার যাবতীয় বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করা হয়ে থাকে। শিক্ষার উপর বিভিন্ন বিষয়ের সমসাময়িক তথ্যাবলী আপনারা খুব অল্পসময়ের মধ্যে আমাদের এই ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন। আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সিলেবাস ভিত্তিক বিষয়ের ওপর নতুন নতুন তথ্য নিয়ে আলোচনা করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আজকে যে টপিক নিয়ে আলোচনা করব সেটি হল ভাব সম্প্রসারণ।

বাংলা ব্যাকরণ এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে ভাব সম্প্রসারণ। বিশেষ করে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত একটি অংশ হচ্ছে ভাব সম্প্রসারণ। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় এবং শিক্ষার্থীদের স্কুল এবং কলেজের আভ্যন্তরীণ পরীক্ষাতেও ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে প্রশ্ন হয়ে থাকে। আমরা আজকে যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য। তাহলে চলুন বন্ধুরা আজকের ভাব-সম্প্রসারণ জানিয়ে নিম্নে আলোচনা করা যাক:

ভাব সম্প্রসারণ: হিংসা যেদিন যাবে দুনিয়া ছাড়ি, সব তরবারি হইবে সেদিন কাষ্ঠের তরবারি

মূলভাব: হিংসা মানুষের অন্যতম রিপু; যা মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। হিংসার কারণেই মানুষ পারস্পরিক হানাহানিতে লিপ্ত হয় এবং নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনে। হিংসার কারণে এই পৃথিবী আজ উন্নতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু যদি হিংসা পরিত্যাগ করা যায়, তবে পৃথিবীতে আর কখনোই যুদ্ধের বিভীষিকা তৈরি হবে না।

সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের জীবন পঞ্চভূত ও ষড়রিপুতে গড়া। রিপু গুলো সব সময় মানুষকে পথভ্রষ্ট করে। পৃথিবীতে অনেকেই আছেন যারা অপরের কল্যাণে আত্ম সুখ অনুভব করেন আবার অনেকে আছেন যারা পরের সুখে নিজের ভেতরে পীড়া অনুভব করেন। এই বৈশিষ্ট্যের মানুষরা ঈর্ষাপরায়ন বা হিংসার দ্বারা আবৃত হন। হিংসা মানুষকে বিবেকহীন অন্ধত্ব প্রদান করে। ফলে তার মধ্যে সামান্যতম সহানুভূতি ও মানবতা বোধ লোপ পায়।

হিংসার কারণে মানুষ কখনোই সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, সংসারে অনেক ব্যক্তি আছে যারা উন্নতির দিকে যখন এগুতে থাকে, তখন তা দেখে অনেকে হিংসায় জর্জরিত হয়। অন্যের উন্নতি দেখে তিনি সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং ব্যতিব্যস্ত হন তার ক্ষতি করতে এবং মানুষের কারণে একই পরিবারের একের সঙ্গে অন্যের শত্রুতা শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেন ফলে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয় আন্তঃসম্পর্কের মধ্যে।

পৃথিবীর ইতিহাসেও পরশ্রীকাতরতা বা হিংসার ফলে বহু বড় বড় যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। এক রাজা অন্য রাজার উন্নতি দেখে, এক সম্রাট অন্যের সমৃদ্ধি দেখে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন, ফলে দুটি দেশ বা জাতির মধ্যে মরণপণ যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং উভয়েই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গেছে ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ বা হিংসার ফলে জার্মানির সর্বময় কর্তা হিটলারের নির্দেশে প্রাণ দিয়েছে বহু মানুষ। এ ধরনের গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। একইভাবে পৃথিবীর অন্যান্য যুদ্ধেও জাতিগত হিংসাই মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। অথচ যদি মানুষ আত্ম বিবেচনায় ভর করে হিংসাকে পরিত্যাগ করতে পার তো, তাহলে পৃথিবীতে বিনা কারনে এত মানুষের প্রাণ যেত না। যদি হিংসার বোধকে মুছে তারা মনে প্রেম ও ভ্রাতৃত্বের জন্ম দিতে পারত তবে অস্ত্রের ঝনঝনানি মানুষের কানে পৌঁছতো না। মানুষের হাতের তরবারি আপনা আপনি হাত থেকে খুলে পড়ত; রূপকার্থে ধারালো তরবারি পরিণত হতো কাঠের তরবারি তে।

মন্তব্য: হিংসা মানুষকে কখনোই ইতিবাচক কোনো পরিণতি দিতে পারে না; তা শুধুই মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। মানুষের মধ্যে সম্পর্কের তার ছিন্ন করে হিংসা তাদের দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। অতি বড় বন্ধুও হিংসার কারণে শত্রুতে পরিণত হয়। তাই সমাজ জীবনে প্রতিটি মানুষেরই হিংসা পরিত্যাগ করা বাঞ্ছনীয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button