প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির উপর মহান আল্লাহ তা’আলা পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ বাধ্যতামূলক ইবাদত করে দিয়েছে। আর একজন মুসলমান ব্যক্তিকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করতেই হবে ইসলামের বিধান অনুযায়ী। তবে একজন মুসলমান ব্যক্তিকে শুধু পাঁচ ওয়াক্ত ফরজের নামাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ব্যতীত বেশ কিছু নামাজ রয়েছে যা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। আর অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান নামাজ গুলোর মধ্যে রমজান মাসের তারাবির নামাজ অন্যতম একটি নামাজ।
কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি রমজান মাসের পূর্ণ ইবাদত করতে চাই সে যেন অবশ্যই রমজান মাসের পুরো মাস জুড়ে তারাবির নামাজ আদায় করে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই আমরা তারাবির নামাজ নিয়ে একটি দ্বিমত রয়েছে আর তা হলো অনেকেই আমরা তারাবির নামাজ ৮ রাকাত আবার অনেকেই ২০ রাকাত পড়ে থাকি। তাই আমাদের মধ্যে মুসলিম ভাই ও বোনদের জানার আগ্রহ তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিসে। তাই আমরা আপনাদেরকে আজকে সহীহ হাদিস অনুসারে জানিয়ে দিব তারাবির নামাজ মূলত কত রাকাত।
একজন মুসলমান ব্যক্তিকে তারাবির নামাজ আদায় করতে হলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আগে জানতে হবে তা হল তারাবির নামাজের রাকাত সম্পর্কে। আমাদের সমাজের আলেমদের দ্বিমতের কারণে একদল মুসলমান ৮ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করেন এবং আর একদল মুসলমান ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করেন। তাই আমরা জানতে চাই সহীহ হাদিস অনুসারে বা ইসলামের বিধান মোতাবেক তারাবির নামাজ কত রাকাত। যেহেতু রমজান মাসের গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদত গুলোর মধ্যে তারাবির নামাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ তাই আমাদের এই বিষয়টি সঠিক ভাবে জেনে তারাবির নামাজ আদায় করাটা উত্তম।
পবিত্র রমজান মাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল এই তারাবির নামাজ। এটি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। আল্লাহর রাসুল (সা:) তিন দিন এই নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করেছেন। তিনি নিয়মিত সম্মিলিত ভাবে জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করলে, তা ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই পুরো রমজানে তিনি জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করেননি। তবে তিনি তারাবির নামাজের প্রতি বিশেষ গুরুত্বের কথা বলেছেন সাহাবাদের তাই তার উম্মত হিসেবে আমাদের তারাবির নামাজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
তারাবির নামাজ কয় রাকাত এই মর্মে অনেক মতভেদ রয়েছে আমাদের মাঝে। আজকের আলোচনা থেকে আপনারা সহজেই তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে সেই মর্মে স্পষ্ট ধারণা পাবেন। ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন সহি হাদিস থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানা যায় তারাবির নামাজের সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে কোন রাকাতের সংখ্যা কোন হাদীসে উল্লেখ করা নেই। তবে কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি তারাবির নামাজ আদায় করতে চাই তাহলে সে ৮ রাকাত থেকে শুরু করে ১২ রাকাত ১৬ রাকাত ২০ রাকাত সর্বোচ্চ ৩৬
রাকাত নামাজ আদায় করতে পারবেন যেহেতু এই নামাজটি রাতের নামাজ এবং নফল একটি ইবাদত তাই আপনি চাইলে ইচ্ছেমতো এই নামাজ আদায় করতে পারবেন। কিন্তু এ নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে আপনাকে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হলো সহীহ এবং শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করতে হবে। শুধু তারাবির নামাজের ক্ষেত্রে নয় প্রতিটি নামাজের ক্ষেত্রে একই কথা বলা হয়েছে। কারণ নামাজ মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই ইবাদতের ক্ষেত্রে কোন অবহেলা করা ঠিক নয়।
একজন রোজাদার ব্যক্তির জন্য তারাবির নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। তবে আমাদের মধ্যে অনেক মুসলমান ব্যাক্তি রয়েছেন যারা শারীরিক অক্ষমতার কারণে রোজা রাখতে পারে না আর রোজা রাখতে না পারার কারণে তারাবির নামাজ থেকে বিরত থাকে। কিন্তু এ বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা তারাবির নামাজের সঙ্গে রোজার কোন সম্পর্ক নেই দুইটা আলাদা আলাদা ইবাদত। তারাবির নামাজ সাক্ষ্য হিসেবে পরের দিনের রোজা কবুল করা হয়।
তারাবির নামাজ যার মতে যত রাকাতই হোক না কেন প্রতি চার রাকাত নামাজ পড়ার পর মোনাজাত করতে হয়। দুই রাকাত দুই রাকাত করে মোট চার রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। চার রাকাত নামাজের মোনাজাত শেষে আবার পরবর্তি রাকাতের জন্য নিয়াত বাধতে হয়। ঠিক এভাবে আমরা রমজান মাসের পুরো মাস জুড়ে তারাবির নামাজ আদায় করতে পারি। আশা করছি আমাদের এখান থেকে আপনারা খুব সহজে বুঝে নিতে পারবেন তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস অনুসারে।
Leave a Reply