প্রিয় ছাত্র ছাত্রী আপনারা নিশ্চয়ই ভালো আছেন। আপনাদেরকে আমাদের এই ওয়েবসাইটে স্বাগত জানাই। আমরা প্রতিনিয়তই প্রতিদিনই নতুন নতুন টপিকস নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হই। বিশেষ করে আমরা এখন বাংলা ব্যাকরণ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করে থাকছি। আজো আমরা আপনাদেরকে একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব।
জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভাল
মূলভাব: মানুষ বেঁচে থাকে তার কাজের মধ্যে। মানুষ মর্যাদা পায় তার কাজের জন্য। জন্মের বড়াই জীবনে তুচ্ছ বলে বিবেচিত হয়। বরং কাজের অবদান এর ফলে মানুষ মরেও স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকে। মানবিক গুণাবলির বিকাশ এবং সে অনুযায়ী সামগ্রিক কল্যাণকর্মের মধ্যেই মানুষ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে, বংশ পরিচয়ে নয়। কাজের মাধ্যমে মানুষ নিজের জীবনকে সফল করে তোলে। আবার কর্মের অবদানে দেশ ও জাতির উন্নতি বিধান করে চলে ।আর সেই ফলপ্রসূ কর্মের জন্যই মানুষ মানুষের স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব: মানবসমাজে জন্মগত দিক থেকে বংশের মর্যাদা যে গুরুত্বের কথা বলা হয় তা প্রকৃতপক্ষে অর্থহীন। মানুষ কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেছে সেটা বিবেচনা না করে মানুষ জীবনে কি অবদান রেখেছে সেটাই বিবেচনা করা প্রধান লক্ষ্য।
চলমান সমাজব্যবস্থায় বংশপরিচয় তেমন কিছু না। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় বংশমর্যাদা মানুষকে প্রকৃত মর্যাদাবান করে গড়ে তুলতে সক্ষম নয় । কর্মময় জীবনের কাছে বংশমর্যাদার কোন মূল্য নেই। আপন জন্মের ব্যাপারে মানুষের নিজের কোন ভূমিকা থাকে না। মানুষের প্রকৃত পরিচয় হয় তার কর্মের উপর। কখনও কখনও আমরা দেখি অনেক নিচু বংশের ছেলে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। আবার অনেক উচ্চ বংশ পরিচয়ধারী ব্যক্তিও বেকার অবস্থায় থাকতে পারে। তাহলে এতেই বোঝা যায় যে বংশ পরিচয় টা তেমন কিছুই না যদি তার কর্মই না থাকে।
আমাদের সমাজে কিছু শ্রেণীর লোক আছে যারা তাদের বংশ মর্যাদাটাকে গুরুত্ব সহকারে দেখে। তারা ভাবে তারাই সব। নিচু বংশে জন্মগ্রহণ করেও অনেক মহাপুরুষ জগতকে ধন্য করেছেন। সমাজের নিচু তলার জন্ম নিয়েও মানুষ কর্ম ও অবদানে বড় হতে পারে। মানব সমাজের ইতিহাসে এরকম অজস্র উদাহরণ মেলে। গোবরেও যদি পদ্মফুল ফোটে তবে সেখানে ফুলের সৌন্দর্যই বিবেচনার বিষয় তার জন্মের উৎস সন্ধান করার কোনো কারণ নেই। মানুষের জীবনে উঁচু-নিচু ভেদাভেদ আছে। মানুষের বৈশিষ্ট্যের বিবেচনায় বংশের মর্যাদা খোঁজ করার কোন দরকার নেই। মানুষকে দেখতে হবে তার কাজের ফলের মধ্যে । মানুষ সংসারে এসেছে বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে। তাকে কাজ করতে হয়। কর্মই জীবন — একথা চিরন্তন সত্য।
নিচু বংশে জন্মগ্রহণ করেও অনেক মহাপুরুষ জগতকে ধন্য করেছেন। সম্রাট নাসিরুদ্দিন প্রথম -জীবনে একজন ক্রীতদাস ছিলেন। জর্জ ওয়াশিংটন একজন সামান্য কৃষকের ঘরে জন্মগ্রহণ করেও তার কর্মগুণে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর শেরশাহের কথা বলাই বাহুল্য। ইতিহাসের পাতায় এরূপ মহাপুরুষের উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে অনেক। সুতরাং মানুষের উচিত জন্মের জন্য যে গ্লানি তা পরিহার করে, স্বীয় কর্মগুণে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। মানুষের গৌরব, সম্মান, খ্যাতি সবই নির্ভর করে তার কর্মের উপরে জন্মের উপরে নয়।
মন্তব্য: পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, মানুষ যে বংশে জন্মগ্রহণ করুক না কেন, সেটা বড় বলে বিবেচিত নয়, যদি তার কর্মই না থাকে তাহলে বংশমর্যাদার কোন মূল্য নেই। কর্ম হচ্ছে মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্য। কর্মের মাধ্যমেই মানুষ তার বংশমর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে পারে। মানুষের জন্ম পরিচয়ের চেয়ে তার কর্মই সর্বাপেক্ষা তাৎপর্য বহন করে। তাই মানুষকে তার কর্মগুণের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা উচিত।
ষষ্ঠ , সপ্তম ,অষ্টম ,নবম ,দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপরের ভাব-সম্প্রসারণ টি তাদের পরীক্ষার সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। আমরা এখানে চেষ্টা করেছি বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে এই ভাব সম্প্রসারণ টিকে সুন্দর করে তোলার। আপনারা এই ওয়েবসাইট পেজে বেশি বেশি করে ভিজিট করুন। এবং প্রতিনিয়ত এই শিক্ষা বিষয়ক অনেক তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন। যা আপনাদের বিভিন্ন পরীক্ষার সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।
Leave a Reply