আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাই। আমরা আজকে যে ভাব সম্প্রসারণ তিনি আলোচনা করব সেটি একাদশ-দ্বাদশ এবং চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাব সম্প্রসারণ। আজকে আর বেশি কথা না বলে চলুন বন্ধুরা আমরা আমাদের ভাব সম্প্রসারণ এর মূল বিষয়বস্তু যে চলে যায়;
ভাব সম্প্রসারণ: কাক কোকিলের একই বর্ণ, স্বরে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন। অথবা, কাক কালো কোকিল কালো, কেউ বলে না কাক ভালো।
মূলভাব: বর্ণ ও আকৃতির সাদৃশ্য থাকলেও সকল বস্তুর মূল্য একই রকম নয়। বর্ণ বা রূপ বড় কথা নয়; বড় কথা হলো তার গুণ। বাহ্যিক চেহারা ও গুণাবলী পরিমাপের মাপকাঠি নয়। মানুষ হিসাবে জন্ম নিলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। উৎকৃষ্ট কর্মের মাধ্যমে ‘মানুষ’ পরিচয় অর্জন করে নিতে হয়।
সম্প্রসারিত ভাব: কাক ও কোকিল দেখতে একই বর্ণের। উভয়ের গায়ের বর্ণ কালো। কিন্তু তাদের এই বর্ণগত সাদৃশ্য উভয়ের সমান মূল্য নির্ধারণের ব্যর্থ হয়েছে। পাখি দুটি আমাদের কাছে সমানভাবে সমাদৃত হয় না। কাক কুৎসিত পাখি হিসেবে ঘৃণিত। আবার কণ্ঠস্বরের কারণে তাদের মান আলাদা। শুধু তাই নয়, কর্কশ স্বরধ্বনির কারনে কাক অশুভ শক্তির প্রতীক। কাকের পরিবেশগত উপযোগিতা থাকলেও গলার আওয়াজ এর কারণে এ প্রাণীটি পরিত্যাজ্য।
অপরদিকে কোকিল কাকের মতই কালো বর্ণের হলেও কোকিলের কণ্ঠস্বর অত্যন্ত সুমধুর। কোকিল তার গানে মানুষের মন আনন্দে ভরিয়ে দেয়। অথচ পরিবেশগত দিক দিয়ে কোকিলের চেয়ে কাক অধিক উপকারী। এমনকি কোকিল নিচে বাসা পর্যন্ত বাঁধতে পারে না। কাকের বাসায় ডিম পাড়ে। কাকের হাতেই কোকিল শাবক লালিত- পালিত হয়। তা সত্বেও কোকিল সবার প্রিয়।
কোকিলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ এর কারণ মনোমুগ্ধকর ডাক। কুহু কুহু ডাকে সে মানুষকে বিমুগ্ধ করে। কুহুতানের মনোরম আমেজ কোকিলের কৃষ্ণবর্ণকেও সুন্দর করে তুলেছে। আমাদের সামাজিক ক্ষেত্রেও একই রকম চিত্র দেখতে পায়। একই রকম গাত্রবর্ণ বা শারীরিক সৌন্দর্য হওয়া সত্বেও সকল মানুষের গ্রহণযোগ্যতা একই রকম নয়। যাদের মুখের ভাষা সুমিষ্ট নয়, তাদের প্রতি মানুষের কোন আকর্ষন থাকে না। উপরন্ত তাদের মানুষ অবজ্ঞা করে এড়িয়ে চলে।
আমাদের সমাজেও আরো অনেক মানুষ দেখা যায় যারা শুধু দৈহিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই মানুষ। তাদের ভেতরটা মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি। তাদের মনটা থেকে গেছে পশুর মতো। ত্যাগ, পরোপকার মহত্ত্ব প্রভৃতি মানবীয় গুণাবলীর সাথে তারা পরিচিত নয়। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করাই এদের মূল উদ্দেশ্য।
এরা সমাজ ও জাতির কোনো উপকারেই আসে না। ফলে সমাজের কাছে এদের মান, মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা নেই। সমাজ সবসময় এদের হীন দৃষ্টিতে দেখে।
পক্ষান্তরে আমাদের সমাজে এমন মানুষও আছে যাদের অন্তর ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। তাদের দৈহিক বৈশিষ্ট্যকে ছাপিয়ে প্রকাশিত হয় তাদের মনুষ্যত্ব। মানবজাতির বৃহৎ কল্যাণের কাছে তারা জলাঞ্জলি দেয় নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ। লোভ-লালসা তাদের স্পর্শ করতে পারে না। সমাজে এসব মানুষদের স্থান তাই সবার উপরে। মৃত্যুর পরও তারা তাদের কর্মের মধ্য দিয়ে অম্লান থাকে মানুষের মনে।
মন্তব্য: মানুষের জীবনে সুমিষ্ট কথা ও আচরণের মূল্য অনেক। তাই আমাদের সবার উচিত নিজ নিজ ভাষাকে পরিশীলিত, সুমিষ্ট ও সুললিত করে তুলতে সচেষ্ট হওয়া। এ কারণেই মানুষের জীবনে ভাষার গুরুত্বও অত্যোধিক।
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আজকের ভাব সম্প্রসারণ এর বিষয়টি ভাষাগত দিক দিয়ে একটি কঠিন কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি সেই ভাব সম্প্রসারণ টিকে সুন্দর এবং সাবলীল ভাষায় উপস্থাপনা করার। এতে করে আপনাদের বুঝতে, পড়তে এবং মুখস্ত করতে সুবিধা হবে। আপনারা ইচ্ছা করলে এই ভাব-সম্প্রসারণ টি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
আপনাদের সফলতায় আমাদের সামনে অগ্রসর হওয়ার পাথেয়। তাই আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট বেশি বেশি করে ভিজিট করুন শেয়ার করুন এবং অন্যদেরকেও এই তথ্য পৌঁছে দেন। এই করোনা মহামারী সময় সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজ এই পর্যন্তই আগামীতে আরও একটি নতুন ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন।
Leave a Reply