
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে আপনারা শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য পেয়ে যাবেন। আমরা পর্যায়ক্রমে শিক্ষার ওপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। তেমনি একটি অংশ হলো বাংলা দ্বিতীয় পত্র। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যাকরণ অংশ নিয়ে আলোচনা করে আসছি।
বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যাকরণ অংশের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে ভাব সম্প্রসারণ। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় নির্দিষ্ট নম্বরের ভাব-সম্প্রসারণ এসে থাকে। বিশেষ করে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভাব সম্প্রসারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ সকল শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা খুব সহজেই আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে প্রয়োজনীয় ভাব সম্প্রসারণ গুলো পেয়ে যাবেন।
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করে চলেছি। আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ কে নিয়ে আলোচনা করব সেটি একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। আমরা আজকে ভাব-সম্প্রসারণ তিনি এ নিম্নে আলোচনা করব:
ভাব-সম্প্রসারণ:
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।
মূলভাব: অন্য- তৃপ্ত মানুষের মন প্রেম ও সৌন্দর্যের মধুর কাব্য সুধায় সিক্ত হয় কিন্তু যে মানুষের ক্ষুধায় অন্ন জোটে না, জঠরাগ্নি যার নিবৃত্ত হয়নি, বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজনটুকু যার জীবনে অস্বীকৃত, সুন্দর তার কাছে কোন তাৎপর্যই বহন করে না। জীবনে ক্ষুধাই যখন সর্বাপেক্ষা প্রবল হয়ে দেখা দেয়, মানুষের জীবন থেকে প্রেম সৌন্দর্য তখন ঝরে পড়ে। অভুক্ত মানুষের কাছে খাদ্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বস্তু আর কিছুই নেই।
সম্প্রসারিত ভাব: ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। পূর্ণিমার মোহনীয় চাঁদও তখন ঝলসানো রুটির মতো মনে হয়। এটা সবার জন্যই সত্য। পেটে ভাত না থাকলে সুস্থ-সবল পরিণত বয়স্ক মানুষও চোখে অন্ধকার দেখে। হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। আইন-কানুন-নীতি সব তুচ্ছ হয়ে যায়। লোপ পায় পাপ-পূণ্যের বোধ। তাই ক্ষুধার্ত মানুষের পক্ষে কোনকিছুই অসম্ভব নয়। ভয়াবহ সব কান্ড ঘটিয়ে বসতে পারে তারা, যা স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কল্পনা করাও কঠিন।
এমন উদাহরণ আমাদের চারপাশেও একেবারে কম নয়। সচরাচর দেখা যায় মা নিজে না-খেয়ে সন্তানের মুখে অন্ন তুলে দেন। নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও রক্ষা করেন সন্তানের জীবন। ক্ষুধার জ্বালা সইতে না-পেরে সেই মা-ই তার প্রাণপ্রিয় সন্তানকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করছে এমন লোমহর্ষক খবরও মাঝে-মধ্যে আমাদের দেখতে হয় সংবাদপত্রের পাতায়।
সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট। অনেক মানুষের জীবনে যখন দুবেলা খাবার জোটে না, তখন কেউ কেউ আবার সম্পদের পাহাড় জমিয়ে তুলেছে। আসলে পৃথিবীতে মানুষ সর্বহারা ও সর্বভোগি এ দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় ধনী আরো ধনী হয়, আর গরিবের অবস্থা প্রতিনিয়ত হতে থাকে শোচনীয়। ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান এবং নানামুখী শোষণ প্রক্রিয়া বিশ্বকে কুলষিত করেছে। মানবতার অবমাননা ঘটেছে প্রতিকারবিহীনভাবে। কিন্তু প্রচলিত সমাজব্যবস্থা এক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার। এই সমাজ কায়েমি স্বার্থান্ধ গোষ্ঠীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাই এ সমাজে গরিবের আর্তনাদ কেবলই নিষ্প্রাণ দেয়ালে মাথা কুটে মরে।
অনাহারী বুভুক্ষু মানুষের কান্না ধ্বনি জানো কেবলই নিষ্ফল রোদন হয়ে কান্নার রোল কেই বাড়িয়ে দেয় এখানে। অনেকে প্রাচুর্যের বেসাতি ছড়িয়ে শিল্প-সাহিত্য ও সূর্যের স্তবক হয়ে বসে আছে তারা সুন্দরের সাধনা আর কোমল অনুভূতির পরিচর্চায় বিভোর।
মন্তব্য: ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে কোন সৌন্দর্যই এই প্রতিভাত হয় না। সৌন্দর্য হলো প্রয়োজনের আনন্দ। ক্ষুধা নিবারণ জীবনমাত্রেই প্রথম প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন যখন অসম্ভব হয়ে ওঠে, তখন কাব্যের শব্দ- ছন্দ- অলংকার এর বৈভব অবাস্তব ও অলীক বলে মনে হয়।
উপরের যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করলাম সেটি আপনাদের অবশ্যই ভালো লাগবে। আমরা চেষ্টা করেছি ভাব-সম্প্রসারণ টি সহজ এবং সুন্দর ভাষায় উপস্থাপনা করার। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে চেষ্টা করি আপনাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্যগুলোকে সাজানোর। আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট বেশি বেশি করে ভিজিট করুন এবং সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনারা সহজেই হাতের নাগালে পেয়ে যাবেন। সবাইকে ধন্যবাদ আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য।
Leave a Reply