মুসলিমদের জন্য ধর্মীয় ঘরের ভেতরে মসজিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেখানে সকল মুসলিম এসে নামায আদায় করতে পারেন এবং ইবাদত বন্দেগী করতে পারেন। প্রত্যেকটি এলাকাই কমবেশি মসজিদ গড়ে উঠেছে এবং সেই মসজিদের বিভিন্ন দায়িত্ব বিভিন্ন জনকে অর্পণ করার মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে তা পরিচালিত হয়ে আসছে। একটি মসজিদে ইমাম খতিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা থেকে থাকেন।
ইমাম খতিব যেমন নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে সকল দায়িত্ব পালন করেন তেমনি ভাবে এলাকায় দোয়া মাহফিল অথবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি শরিক হতে পারেন। তাছাড়া মুয়াজ্জিন নামাজের জন্য মুসল্লিদেরকে আজানের মাধ্যমে আহবান করতে পারেন। এছাড়াও কিছু কিছু মসজিদের খাদেম রয়েছে এবং মক্তব পরিচালনা করার জন্য মক্তব পরিচালক রয়েছেন।
মসজিদের অভ্যন্তরীণ কাজগুলো পরিচালনা করা ছাড়াও আর্থিক দিক থেকে অথবা প্রত্যেকটি কাজ সুশৃংখলভাবে পরিচালনা করার জন্য সংগঠনের প্রয়োজন হয়। মসজিদের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার জন্য আমরা যখন সকলের সম্মিলিত মতামতের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে বিভিন্ন দায়িত্ব অর্পণ করে তখন সেখানে মসজিদ কমিটি তৈরি হয়ে যায় এবং তারা বিভিন্ন দায়িত্ব গ্রহণ করে সকল মুসল্লিকে শরিক হওয়ার জন্য আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে দাওয়াত দিতে পারেন।
তাই আপনারা যারা মসজিদ কমিটির পথ সমূহ কি কি তা জানতে এসেছেন তাদের জন্য এখানে আমরা এ সম্পর্কে আলোচনা করব এবং মসজিদ কমিটির যে পথ গুলো রয়েছে তাদের কোন পদের কি দায়িত্ব রয়েছে এবং তারা কোন কার্যাবলীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তা নিজে আলোচনা করা হলো।
সভাপতি – মসজিদ কমিটির সংগঠনের প্রধান হচ্ছেন সভাপতি। তিনি সকলের সম্মতিক্রমে মনোনীত হয়ে থাকেন এবং তার দায়িত্বের মাধ্যমে মসজিদের সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেন। তিনি তার অধিকার বলে মসজিদে বিভিন্ন সভায় সভাপত্র করতে পারবেন এবং তার যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবে একটি মসজিদ পরিচালিত হতে পারে।
সহ-সভাপতি – সভাপতির অবর্তমানে সহ-সভাপতি বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব পালন করবেন এবং অনেক সময় যদি সভাপতি কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারেন তাহলে তিনি সহ সভাপতি হয়ে এই কাজের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তাছাড়া সহ-সভাপতি এর ওপরে যে ধরনের কাজ অর্পণ করা হয় তিনি সেগুলো তার অধিকার অনুযায়ী এবং দায়িত্ব ও ক্ষমতার বলে সম্পন্ন করতে।
সাধারণ সম্পাদক – সাধারণ সম্পাদক হলেন একটি মসজিদ কমিটির অথবা যে কোন কমিটির নির্বাহী কর্মকর্তা। বিভিন্ন প্রয়োজনে তিনি মিটিং ডাকার পাশাপাশি সেই মিটিং পরিচালনা এবং মিটিং পরিচালনার পর সকল রিপোর্ট একই সঙ্গে পেশ করা তার দায়িত্ব। তাছাড়া সভাপতি তার ওপর যে সকল দায়িত্ব অর্পণ করবেন সেগুলো নিজ দায়িত্বে এবং ক্ষমতা বলে তিনি সেগুলো পালন করবেন এবং মসজিদ কমিটির উন্নতির জন্য তিনি যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে তা সহ-সভাপতি কাছে এবং সভাপতির কাছে পেশ করবেন।
সহ-সাধারণ সম্পাদক – সহ-সাধারণ সম্পাদকের ওপরে যে ধরনের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে তিনি তার দায়িত্ব অনুসারে সেই কাজগুলো খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন করবেন এবং যে কোন প্রয়োজনে তিনি সভাপতির কাছে তার আর্জি পেশ করতে পারেন। তাছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদকের কাজে সাহায্য করার পাশাপাশি যদি কোনো কারণে সাধারণ সম্পাদক কোন মিটিংয়ে বা আলোচনা সভায় উপস্থিত হতে না পারেন তাহলে তার হয়ে তিনি এই কাজগুলো সম্পন্ন করে দিবেন।
কোষাধ্যক্ষ – একটি মসজিদের উন্নতি করার জন্য অথবা মাসিক আয়-ব্যয়ের যে হিসাব রয়েছে তা কোষাধ্যক্ষের কাছে থেকে থাকে। কেউ যদি মসজিদের উন্নতির জন্য কোন কিছু দান করে তাহলে সেগুলো কোষাধ্যক্ষের বরাবর জমা থাকবে এবং তিন নির্দিষ্ট সময় পর পর মসজিদের সকল সদস্যদের কাছে এবং সকল মুসল্লির কাছে তার কাছে বর্তমান সম্পদের পরিমাণ এবং কে কত পরিমান কি জিনিস দিয়েছে সেগুলো উল্লেখ করবেন।
সদস্য মন্ডলী-উপরের উল্লেখিত পদগুলো ছাড়াও সদস্য থেকে থাকেন এবং সদস্য মন্ডলী হিসেবে প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ একটা মসজিদে শুধু নামাজ আদায় করা এবং ইবাদত বন্দেগী ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে এবং এক্ষেত্রে সদস্য মণ্ডলী যাবতীয় কাজে সকলকে সাহায্য করবেন এবং মসজিদের উন্নতির জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করার পাশাপাশি প্রত্যেকটি কাজের জন্য তারা কার্যকারী পরিষদের কাছে দায়ী থাকবেন।
Leave a Reply