
মানব জীবনে চলাচল করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচয় ঘটে এবং এই পরিচয় থেকে তা পরিণয়ের রূপান্তর নেই। তবে আপনার ভেতরে যদি এই জ্ঞান থাকে যে একজন অপরিচিত নারীর সঙ্গে এভাবে কথা বলাটা বৈধ নয় তখন আপনারা হয়তো বিয়ের কথা চিন্তাভাবনা করতে পারেন।
কিন্তু বর্তমান সময়ের সমাজব্যবস্থা কঠিন হওয়ার কারণে বিয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বাধা চলে আসে এবং এক্ষেত্রে যদি বাধা আসে এবং আপনি যদি আপনার পছন্দের মানুষকে না খেয়ে থাকেন তাহলে হয়তো আপনার আজীবনের জন্য কষ্ট হবে। যেহেতু ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা সেহেতু পছন্দের মানুষকে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের দোয়া রয়েছে যেগুলো আপনারা আমল করতে পারেন এবং পছন্দের মানুষকে পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করতে পারেন।
তবে অনেকে অনেক সময় প্রশ্ন করে থাকেন যে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য দোয়া করা যাবে কিনা। এক্ষেত্রে আপনাদেরকে বলবো যে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য আপনারা যদি সৎ ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন এবং আপনাদের ভেতরে যদি কোন ধরনের অসৎ কার্যকলাপ না হয়ে থাকে তাহলে আপনারা অবশ্যই পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য দোয়া করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাদের ভেতরেই কথাবার্তা কম করে দিতে হবে এবং উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে এই বিয়ের কাজ এগিয়ে চলবে। যদি উভয় পরিবার রাজি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা বিয়ের জন্য বসতে পারেন এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই ইসলামিক জীবন ব্যবস্থা অনুসরণ করে আপনাদেরকে অবশ্যই বিয়ের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।
যেহেতু আপনারা ইসলামিক নিয়ম অনুসরণ এই কাজটি করতে যাচ্ছেন সেটা আপনাদেরকে অবশ্যই সকল বিষয় বিবেচনা করতে হবে। আপনি হয়তো পছন্দের মানুষকে বিয়ে করবেন এবং বিয়ে করার জন্য আগেই শারীরিক সম্পর্কে যাবেন তখন আপনাদের এই বিয়ে হালাল হবে না এবং সেই নারী হয়তো আপনার জন্য হারাম হয়ে যাবে। যদি আপনার কাউকে ভালো লেগে থাকে তাহলে দেখতে হবে সেই নারী যদি ইসলামিক জীবন ব্যবস্থা মেনে চলে এবং নামাজের দিক থেকে অন্যান্য বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে মেনে চলতে পারে তাহলে পারিবারিকভাবে আপনারা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এক্ষেত্রে যদি কোন ধরনের বাধা সৃষ্টি না হয় এবং খুব সুন্দর ভাবে যাতে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্ভব হয় তার জন্য আপনারা নিজের দোয়া গুলো করতে পারেন।
আপনারা হয়তো পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য বিভিন্ন ধরনের আমল পেতে চাইছে না অথবা এটা জানতে চাইছেন কোন দোয়া পাঠ করলে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করা সম্ভব হবে। এখানে আপনাদের জন্য এই তথ্য প্রদান করা হলো এবং এই তথ্য মোতাবেক আপনারা নিজের দেওয়ার দোয়াটি পাঠ করলেই আপনারা হয়তো পছন্দের মানুষকে বিয়ে করলে হয়তো ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিয়ের জন্য এগিয়ে যেতে পারবেন এবং সরাসরি মহান আল্লাহ পাক আপনাদের কাছে সাহায্য করবেন। পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য পরিবারের প্রতি চাপাচাপি না করে আপনারা নিজেরাই অবশ্যই দোয়া করবেন যাতে করে আপনাদের এই মনোবাসনা পূর্ণ হতে পারে।
সেই দোয়াটি হলো-
ﺭَﺏِّ ﺇِﻧِّﻲ ﻟِﻤَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻟْﺖَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮٍ ﻓَﻘِﻴﺮٌ
উচ্চারণ : রাব্বি ইন্নি লিমা- আনজালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাকির।
অর্থ : হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ পাঠাবে, আমি তার মুখাপেক্ষী।
(সুরা আল-কাসাস, আয়াত : ২৪)
তাছাড়া কুরআন মাজীদে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য এই আয়াতটি উল্লেখ করা আছে এবং আপনারা যদি এটা পাঠ করেন তাহলে হয়তো আপনার মনের মানুষের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাবে এবং মহান আল্লাহ পাক আপনাদের দুজনকে একই বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারেন।
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻨَﺎ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻦَﺍ ﻗُﺮَّﺓَ ﺃَﻋْﻴُﻦٍ ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﺇِﻣَﺎﻣًﺎ
উচ্চারণ : রাব্বানা-হাবলানা-মিন আজওয়া-জিনা- ওয়া যুররিইয়া-তিনা, কুররাতা আ‘ইউনিওঁ, ওয়াজ‘আলনা-লিলমুত্তাকিনা ইমা-মা-।
তাই পছন্দের মেয়ে বিয়ে করার ক্ষেত্রে অবশ্যই উদ্দেশ্যে সৎ হতে হবে এবং এক্ষেত্রে সুন্দর একটি জীবন শুরু করার জন্য ইসলামিক যে সকল বিধি-নিষেধ রয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। তাছাড়া উভয়কেই ইসলামিক শরিয়া মোতাবেক জীবনকে পরিচালিত করতে হবে এবং কোন ধরনের অন্যায় কাজ অথবা ইসলামবিরোধী কাজ করা যাবে না। সংসারকে সুখে শান্তিতে পরিচালনা করার জন্য একজন পুরুষের নিজ নিজ দায়িত্বে যেমন পালন করতে হবে তেমনি ভাবে একজন নারী কেউ সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব খুব সুন্দরভাবে পালন করতে হবে।
অর্থাৎ ইসলামের জীবন গণ্ডির ভেতর থেকে আপনারা সর্বোচ্চ সৎ ভাবে জীবন যাপন করার চেষ্টা করবেন এবং এক্ষেত্রে ইসলামিক জীবন নীতি মেনে চললে আপনাদের সংসারে অবশ্যই বরকত আসবে। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
Leave a Reply