প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আমাদের এই ওয়েবসাইট পেজে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আমরা আজ আরও একটি নতুন ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এই ভাব সম্প্রসারণ টি বিশেষ করে ৬ষ্ট, ৭ম শ্রেণির জন্য খুবই উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। আশা করছি আপনাদের পাঠ্যপুস্তক এর সহায়ক হিসেবে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এই ভাব সম্প্রসারণ টি অনেক কাজে লাগবে। আজকে আমরা আপনাদের জন্য যে ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব সেটি হলো পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না। চলুন শিক্ষার্থীবৃন্দ আমরা এই ভাব সম্প্রসারণ এর বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা করি।
পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না।
মূলভাব: পরের উপকারের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়াই হচ্ছে জীবনের সার্থকতা। ফুলের মতোই মানুষের জীবন। পুষ্প কিন্তু নিজের জন্য ফোটে না তার কাজ হচ্ছে নিজের সৌন্দর্য ও সুবাস অন্যদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া। এভাবে সে নিজের সার্থকতা খুঁজে পায়। তদ্রুপ অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারলেই জীবন সুখময় এবং আনন্দময় হয়ে উঠে। সেখানেই জীবনের প্রকৃত সুখ।
সম্প্রসারিত ভাব: মহান সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সব বস্তুকে অন্যের উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। অপরের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করার মধ্যে রয়েছে মানব জীবনের প্রকৃত সার্থকতা। মানুষ অপরের মঙ্গলের জন্য নিজের প্রচেষ্টা নিয়োজিত করলে তাতে তার মহান চরিত্রের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। ফুলকে এখানে রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।
ফুলের সৌন্দর্য ও ঘ্রাণ কিছুই নিজের জন্য নয়। অন্যের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যেই ফুলের সার্থকতা। এভাবে নিজেকে বিলিয়ে যখন ফুলের জীবনের অবসান ঘটে তখন উজাড় করা ভালোবাসা মানুষের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকে। পৃথিবীতে যারা মহৎ ব্যক্তি তারা অন্যের উপকারে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। ফুল এবং মহৎ ব্যক্তি আদর্শের প্রতীক। অপরের জন্য জীবন উৎসর্গ কখনও জীবনের সমাপ্তি নয়, বরং তা জীবনের সার্থকতা। ‘বিশ্বমানবতাকে উদার হৃদয়ে গ্রহণ করে মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয়াই মানুষের নীতি হওয়া উচিত।’
মানুষের জীবনও অনেকটা ফুলের মত। মানুষের চারিত্রিক মাধুর্য হ ওয়া উচিত ফুলের মত সুন্দরও সুরভিত। ফুলের মতোই তা নিবেদিত হওয়া উচিত। পরের জন্য সমাজের স্বার্থে মানুষ শুধু ভোগবিলাস স্বার্থের জন্যই জন্মগ্রহণ করেন পরের কল্যাণে জীবনকে উৎসর্গ করার মাঝেই তাদের জীবনের চরম সার্থকতা। সব মানুষ যেদিন ফুলের আদর্শ ভেবে পরের কল্যাণে জীবনকে বিলিয়ে দিতে পারবে সেই দিনই সমাজ জীবনে দুঃখ যন্ত্রণা অবসান ঘটবে মানুষের জীবন হয়ে উঠুক আনন্দময় কল্যাণময়।
মানুষ যেদিন ফুলের আদর্শ ভেবে পরের কল্যাণে জীবনকে বিলিয়ে দিতে পারবে সেদিনই সমাজ জীবনে দুঃখ যন্ত্রণা বৈষম্যের অবসান হবে। মানুষের জীবন হয়ে উঠবে আনন্দময় ও কল্যাণময় তাই মানুষকে ব্যক্তি স্বার্থের কথা না ভেবে সবার স্বার্থের কথা ভাবতে হবে।
মন্তব্য: আলোচনায় আমরা পরিশেষে বলতে পারি যে, মানুষ যদি নিজের জন্ম লাভের মূল উদ্দেশ্য নিজেকে পুষ্পের মত বিকশিত করা মনে করে এবং স্বীয় স্বার্থ সামর্থ্য অনুযায়ী কল্যাণকর কাজের মাধ্যমে বিশ্ব মানবের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে তাহলেই মানব জীবনের যথার্থ সার্থকতা হয়। ফুল যেমন সুগন্ধ ছড়িয়ে মানুষের মনকে আমোদিত করে। মানুষও তেমনি পরের দুঃখ দূর করার জন্য , পরের মন জয় করার জন্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করবে তাতেই জীবনের সার্থকতা পরিচয় পাওয়া যাবে।
উপরোক্ত যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আলোচনা করা হল নিশ্চয়ই আপনাদের ভাল লেগেছে। আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটের যতটুকু পেরেছি সুন্দর সহজ এবং ভাবে উপস্থাপনা চেষ্টা করেছি। আপনারা বেশি বেশি করে এই ওয়েবসাইট পেজে ভিজিট করুন এবং অন্যান্যদের ভিজিট করতে বলুন। আমরা বাংলা ব্যাকরণ এর আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিশদ আকারে এই ওয়েবসাইট পেজে আলোচনা করব। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন।
Leave a Reply