প্রবন্ধ রচনা বাংলা ব্যাকরণ এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্কুল কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রবন্ধ রচনা এসে থাকে। আর আপনারা এই প্রবন্ধ এবং রচনা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সার্চ করে থাকেন। যারা এই প্রবন্ধ এবং রচনা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সার্চ করে থাকেন তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে সার্চ করবেন। এখানে আপনাদের প্রয়োজনীয় এবং চাহিদা অনুযায়ী প্রবন্ধ রচনা গুলো তুলে ধরা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি প্রতিটি প্রবন্ধ এবং রচনার মূল বিষয়গুলো আলোচনা করার। আজকে যে প্রবন্ধ রচনা টি আলোচনা করব তা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা- বাংলার ভূ প্রকৃতি- বাংলার গ্রাম- বাংলার নদ নদী-ষড়ঋতুর প্রকৃতির দৃশ্য-টিলা ও পাহাড়-আঞ্চলিক সৌন্দর্য- উপসংহার।
ভূমিকা: বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এর মাটি তরুলতা বন-বনানী ও নদী-নালা দেশটিকে এনে দিয়েছে বৈচিত্র্যময় সন্দেহ আর অতুলনীয় গৌরব এদেশের সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়ে যুগে যুগে বহু পর্যটক এখানে এসেছেন।
বাংলার ভূ প্রকৃতি: বাংলাদেশ একটি বৃহৎ ব-দ্বীপ। হাজারো নদী-নালার প্রবাহে এদেশের মাটি নরম পলি আস্তরে বাঁধা। বিস্তীর্ণ সমভূমি গঠিত হয়েছে পলিগঠিত বেলে কিংবা দো-আঁশ মাটিতে। আবার নদীতীর এবং সমুদ্র উপকূলে রয়েছে বালিময় বিস্তীর্ণ এলাকা। বালুর চিকচিক আর পলিমাটিতে সবুজের সমারোহ সিলেট ও চট্টগ্রামের উঁচু পাহাড়ে শিলাময় মাটি ভূ প্রকৃতির অপরূপ শোভা আমাদের মুগ্ধতা বাড়ায়।
বাংলার গ্রাম: বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ব্যাপী রয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ছায়া ঢাকা পাখি ডাকা গ্রামগুলো প্রকৃতির সাথে নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ। গ্রামের যেসব প্রাকৃতিক দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করে সেগুলো হলো— সবুজ ফসলের মাঠে বাতাসে ঢেউ, বনে বনে ফল আর ফলের বৃক্ষ, নীল আকাশে পাখা মেলে উড়ে যাওয়া ঝাকে ঝাকে পাখি, কৃষাণীর ধান বানার শব্দ, নদীতে নৌকা চলা দৃশ্য, গরুর পাল নিয়ে গাইতে গাইতে রাখালের মাঠে গমন প্রভৃতির দৃশ্য।
বাংলার নদ নদী: বাংলাদেশের পা চুমে বয়ে গেছে ছোট-বড় অসংখ্য নদ-নদী। বাংলার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে নদ-নদী অন্যতম উপাদান। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলী প্রভৃতি প্রধান নদ- নদী ছাড়াও ছোট-বড় অনেক শাখা ও উপনদী বাংলার বুকে শিরা-উপশিরার মতো বয়ে গেছে। নদীর পানি হতে পাওয়া পলি এদেশের মাটি কে করেছে উর্বর। বিভিন্ন ঋতুতে নদ-নদী ধারণ করে বিভিন্ন রূপ। এছাড়াও সারা দেশে রয়েছে অসংখ্য হাওর-বাওর ও শোভময় ঝিল।
ষড়ঋতুর প্রকৃতির দৃশ্য: ষড়ঋতুর পালাবদলে প্রকৃতির রূপে ও আসে পরিবর্তন। গ্রীষ্মের প্রখর সূর্যতাপে মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে যায়। কালবৈশাখী উড়িয়ে নাই অসহায় মানুষের ঘরবাড়ি। এর মধ্যেও আম, জাম, লিচু, কাঁঠালের সমারোহ বাংলার প্রকৃতিকে আনন্দময় করে তোলে। এরপর স্নিগ্ধ রূপ নিয়ে আসে বর্ষা। সারা আকাশ থাকে মেঘে ঢাকা। অবিরাম বর্ষণে নদ-নদী খাল-বিল ফসলের মাঠ পানিতে থৈ থৈ করে।
টিলা ও পাহাড়: সমভূমি দেশ হলেও বাংলাদেশের রয়েছে অনেক টিলা ও পাহাড়। সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ নিবিড় অরণ্য এবং বিচিত্র জীবজন্তু বাংলার অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। মধুপুর ও গাজীপুরের সুবিশাল শালবন এবং সিলেটের শিলাময় পাহাড় ও ঝর্ণা মানুষের চোখকে জুড়িয়ে দেয়। আবার সিলেট চট্টগ্রামে রয়েছে উঁচু পাহাড়ে শিলাময় মাটি। রাঙ্গামাটির পার্বত্য শ্যামলিমার আকাশ যেন পাহাড় ছুঁয়ে যায়।
আঞ্চলিক সৌন্দর্য: বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক শোভাও কম নয়। এ দেশের কোথাও বনভূমি কোথাও সমতল অঞ্চল আবার জলের কুমির ডাঙায় বাঘ প্রভৃতি এদেশের প্রকৃতিকে বৈচিত্র দান করেছে। আমাদের দেশেই রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। যেখানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক আসেন।
উপসংহার: বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের তুলনা নেই। ষড়ঋতুর অফুরন্ত দানে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ, সুন্দর ও আরামদায়ক করে রেখেছে। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ বাংলাদেশ। বিশ্ব প্রকৃতির সৌন্দর্য সম্ভারে বাংলাদেশ একটি বিস্ময়কর সংযোজন সে জন্যই কবি সগর্বে উচ্চারণ করেছেন—
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি”।
উপরের যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করা হল আশা করি আপনাদের অবশ্যই ভালো লাগবে। আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রচনা নিয়ে আপনাদের সামনে এই ওয়েবসাইটে আপডেট করে থাকি। প্রতিটি রচনায় সহজ সুন্দর সাবলীল ভাষায় উপস্থাপনা করার চেষ্টা করেছি।
Leave a Reply