
বাংলাদেশের ষড়ঋতু বা ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ অথবা রূপসী বাংলাদেশ নিয়ে যারা প্রবন্ধ রচনা খুঁজছেন তারা এখনই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এখানে আমরা এ বিষয়ে সুন্দরভাবে প্রবন্ধ রচনা উপস্থাপনা করেছি। এই রচনা মূলত পঞ্চম শ্রেণি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী একটি রচনা। শুধু তাই নয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা তো আমরা সচরাচর এই রচনা দেখতে পাই।
শিক্ষার্থী বৃন্দ আপনারা আপনাদের পাঠ্যপুস্তুক ছাড়াও এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনার বিষয়বস্তু গুলো জানাতে আমরা সাহায্য করেছি মাত্র। আপনারা শুধুমাত্র আমাদের এই ওয়েবসাইটে যে রচনাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে পরীক্ষায় অবশ্যই অংশগ্রহণ করবেন না কারণ এর পাশাপাশি অবশ্যই পাঠ্য পুস্তকের সহযোগিতা নিবেন। তাহলে আজকে আমাদের রচনার মূল বিষয়বস্তু তে আমরা এখন যাব:
বাংলাদেশের ঋতুবৈচিত্র্য
অথবা বাংলাদেশের ষড়ঋতু
অথবা রূপসী বাংলাদেশ
প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা-বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য-গ্রীষ্মকাল- বর্ষাকাল- শরৎকাল- হেমন্তকাল- শীতকাল বসন্তকাল, উপসংহার।
ভূমিকা: অপরূপ সৌন্দর্যের সুরম্য লীলা নিকেতন আমাদের এই দেশ। বাংলাদেশ ৬ টি ঋতুর পালাবদলে অনন্য সাজে সজ্জিত হয় প্রকৃতি ও পরিবেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই দেশ বাংলাদেশ। কবি বলেছেন—-“ধন ধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।( দ্বিজেন্দ্রলাল রায়)
বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: প্রকৃতির বিচিত্র রূপের আধারে ঋতুভেদে নানা ভাবে প্রকাশ পায়। একেক ঋতুতে একেক ভাবে সাজ সজ্জার মাধ্যমে প্রকৃতির সর্বদায় আকৃষ্ট করেছে। মোহিত করেছে ভাবুক হৃদয়কে । বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত ঋতুর পর্যায়ক্রমিক আগমনে নবরূপে সেজে ওঠে প্রকৃতি।
গ্রীষ্মকাল: প্রখর রোদ ভ্যাপসা আবহাওয়া আর নিষ্ঠুর রুদ্রতা নিয়ে ঋতুচক্রের সূচনা করে গ্রীষ্ম। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্ম ঋতু । প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়িয়ে ফেলে মাটি, মাঠ-ঘাট প্রান্তর। উত্তাপের তীব্রতার পরেই মধু মাসের মধু ফলে বাংলার ঘরে ঘরে। উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস পূর্ণতা পায় সে উৎসব। গ্রীষ্মকালেই প্রকৃতির বুকে আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় চারপাশ।
বর্ষাকাল: গ্রীষ্মের রুক্ষ প্রকৃতিকে সচিব করতে আসে বর্ষা। আষাঢ়- শ্রাবণ এই দুই মাস বর্ষাকাল। মেঘের গুরু গুরু ডাক বিদ্যুতের গর্জন আর সারাদিন অবিরাম বর্ষণ এই ঋতুর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। এসময় গাছপালা, বন-বনানীর পরোতে পরোতে জেগে ওঠে সবুজের সুষমা। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর ডোবা পানিতে টাইটুম্বর হয়ে যায়। প্রকৃতিতে নবযৌবনের সজীব লাবণ্য পরিস্ফুটিত হয়। আবার বর্ষা নিয়ে আসে বন্যা। বন্যার কারণে হয় এই নদী ভাঙ্গন। তবু কৃষকের কাছে বর্ষা এক পরম কাঙ্ক্ষিত ঋতু।
শরৎকাল: বর্ষার মেঘাচ্ছন্ন গম্ভীর আকাশকে বিদায় দিতেই যেন বাংলার প্রকৃতিতে আবির্ভাব ঘটে শরৎকালের। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস শরৎকাল। ঝকঝকে নীল আকাশ হয়ে ওঠে নির্মেঘ। তবে হালকা সাদা মেঘ আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে উদ্দেশ্যহীনভাবে ছুটে বেড়ায়। সোনালী রোদে ঝকমক করে ওঠা চারপাশ শিউলি ফুলের মিষ্টি সুবাস, নদীতীরে কাশফুলের বিপুল সমারোহ নিয়েই শুরু হয় শরৎকাল।
হেমন্তকাল: কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই দুই মাস হেমন্তকাল। বাংলার ঋতু চক্রের প্রাচুর্য আর প্রশান্তির অঙ্গীকার নিয়ে আসে। কৃষকের মুখে হাসি ফুটাতে বাড়ির আঙ্গিনায় আসে নতুন ধান। গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয়ে যায় নবান্নের উৎসব। চলে আত্মীয়-পরিজন কে নিয়ে পিঠা পায়েস খাওয়ার আয়োজন। হেমন্তে না থাকুক ফুলের সমারোহ, কিন্তু হেমন্ত থাকে ফসলের সম্ভার এবং প্রকৃতিতে থাকে রূপের ঐশ্বর্য।
শীতকাল: হেমন্তের পর বাংলার প্রকৃতিতে কুয়াশার চাদর নিয়ে নেমে আসে শীত। হিমেল হাওয়া যেন কোন সুদূর থেকে বয়ে নিয়ে আসে এক সীমাহীন রিক্ততা। পিঠাপুলির মহোৎসবে মেতে ওঠে গ্রামবাংলা। এ সময় প্রচুর শাক-সবজি পাওয়া যায়।
বসন্তকাল: বসন্তকাল কে বলা হয় ঋতুরাজ। কচি সবুজ পাতায় সজ্জিত হয়ে গাছের প্রতিটি লাল ফুলে ফুলে ভরে ওঠে চারপাশ। কোকিলের মিষ্টি গান, বাতাবি লেবুর ফুল আর আম্রমুকুলের গন্ধে ভারি হয়ে ওঠে বাতাস। শিমুল- কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম উচ্ছ্বাসে প্রকৃতির সৌন্দর্যের এই বসন্ত কালে।
উপসংহার: উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ যেখানে এক একটি ঋতু একেক রকম সৌন্দর্য নিয়ে আসে। ঋতুচক্রের ঘূর্ণাবর্তে এমন অপরূপ সৌন্দর্যের পীঠস্থান আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।
Leave a Reply