রচনা: বই পড়ার আনন্দ

রচনা: বই পড়ার আনন্দ

বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা সকল কিছু তথ্যই এখন ঘরে বসেই ক্ষণিকের মধ্যেই পেয়ে যায়। বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান বিভিন্ন ডাটা আমরা কালেক্ট করি ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমরা আজকে কেও পিছিয়ে নেই। আর আমাদের এই ওয়েবসাইট সেই সকল কাজগুলোই করে থাকে। এখানে শিক্ষার উপর যাবতীয় তথ্য আপনার হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবেন। আমরা বেশ কয়েকদিন যাবৎ বাংলা ব্যাকরণ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করছি। আজও ঠিক তেমনি আমরা একটি রচনা নিয়ে আলোচনা করব।

বই পড়ার আনন্দ

প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা-বইয়ের বৈশিষ্ট্যঃ বই পাঠের আনন্দ- বইয়ের সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক- উপযুক্ত বই নির্বাচন- বই পড়ার সময় নির্বাচন-বই যখন কথা বলে-উপসংহার।

ভূমিকা: বই মানুষের অমূল্য সম্পদ। বই এর মাধ্যমে মানুষ তার অর্জিত জ্ঞান অর্জন করে। অবসর এবং বিনোদনের সঙ্গী হিসেবে বই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কথায় আছে- ‘পড়িলে বই, আলোকিত মানুষ হই।’

বইয়ের বৈশিষ্ট্যঃ বই হচ্ছে মানুষের মেধা মনন ও প্রজ্ঞা চেতনা পরিস্ফুটন এর উৎকৃষ্ট মাধ্যম। বইয়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি নিঃস্বার্থভাবে পাঠকের হৃদয় বৃত্তিকে জাগ্রত করে এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়। মহাকালের অনন্ত স্রোতধারায় যে সব মহাজ্ঞানী মহাজন তাঁদের জীবনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনাগত প্রজন্মের জন্য সৃজন করেছেন কালোত্তীর্ণ ইতিহাস, পুস্তকের পাতায় সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা সেগুলো কে পেয়ে থাকি মূল্যবান পথপ্রদর্শক হিসেবে। জ্ঞানের সে অমিতধারা যুগ-যুগান্তর ধরে বহতা নদীর মতো প্রবহমান বলে পুস্তক পাঠের কোনো জুড়ি নেই।

বই পাঠের আনন্দ: বই জীবনেরই জন্য। দেশ-কালের কত তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনা, জীবনের চড়াই-উৎরাই এর কত অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ হয়েছে। বই হতে পারে নিরানন্দ জীবনের আনন্দের উপকরণ। পাঠক হিসেবে বইয়ের সঙ্গে মিশে একাকার হতে পারলে বই আমাদের জীবনে দিতে পারে আনন্দের ফল্গু ধারা শান্তির মহাপ্রস্রবণ।

বইয়ের সঙ্গে পাঠকের সম্পর্ক: বই কেবল যে জ্ঞান অর্জনের উপায়, তা নয়। বই সত্য সুন্দর আনন্দময় অনুভূতিকে পাঠক চিত্রকে আলোড়িত করে। নতাশা ক্লান্ত বিভ্রন্ত নৈরাশ্য গ্রস্থ মানুষকে পৌঁছে দেয় জীবনের মহৎ প্রাঙ্গণে। উৎকৃষ্ট গ্রন্থি মানুষকে পশু বৃত্তির স্থূল স্তর থেকে মনুষত্বলোকে নিয়ে যেতে পারে। পাষণ্ড প্রাণ আবার নতুন করে খুঁজে পায় মনুষত্ব। বই এর মধ্যেই তার ঘটে নতুন জন্ম। পোস্ত কি আমাদের ত্রিকাল সূত্রে আবদ্ধ করে আশা জাগায় স্বপ্ন দেখায় সোনায় বিপ্লবী সংগীত। বই আমাদের হাতে তুলে দেয় নতুন প্রভাতের মঙ্গল আলো সঠিক পথের নির্দেশনা। তাই বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উন্নত ও আনন্দপূর্ন জীবন গঠন করা যায়।

উপযুক্ত বই নির্বাচন: বই নির্বাচনে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল বই যুবসমাজকে সাময়িক আনন্দ দিলেও সময়ের ব্যবধানে তার দেশ ও জাতির জন্য অকল্যাণ ডেকে আনে। যে বইয়ে সমাজের নানা বিষয় পোশাক-পরিচ্ছদ অলংকার হাসি-ঠাট্টা রসালাপ সুখ-দুঃখ ইত্যাদি নিপুণভাবে উঠে এসেছে পাঠক কে সে রকম বই মনোনীত করতে হবে। যে বই বই পড়লে সমাজের দেশের সম্পর্কে জানা যাবে মানুষ উপকারে আসবে সেই রকম বই আমাদের সিলেকশন করে পড়তে হবে।

বই পড়ার সময় নির্বাচন: বই পড়ার আনন্দ সবসময় একরকম হয় না। পরিবেশ পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিকতা অনুযায়ী বই পড়ার আনন্দ বিভিন্ন মাত্রা লাভ করে। পাহাড়ি নির্জন এলাকায় কোন ঝর্ণার পাশে বসে একটি বই পড়লে মনে যে আবেগ-অনুভূতি দোল খেয়ে উঠবে কোন ব্যস্ত এলাকায় বইটি পড়লে সে রকম অনুভূতি হবে না।

বই যখন কথা বলে: বই যখন পাঠকের সঙ্গে কথা বলে তখন পাঠকের মতে ধ্যানমগ্ন ভর করে। পাঠক একমুখী চিন্তা-চেতনা কল্পনা ও আবেশে মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ে। একটি ভালো বই একজন সরস গল্পকারের মত। যেকোনো বিষয়ের বই লেখক এর লেখার গুণে সরস হতে পারে। বই যখন কথা বলে বইয়ের সে কথা পাঠককে সং গুলাবের চরম সুখ দেয় অথচ বিনিময়ে কিছুই প্রত্যাশা করে না।

উপসংহার: বই হোক আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।বই পড়ার হাজারো কারনের মাঝে সবচেয়ে বড় কারনটি হলো, একমাত্র বই-ই হতে পারে আপনার জীবনের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে, নিজেকে আরো পরিণত করে তোলার সুযোগটি নিশ্চয় হাতছাড়া করতে চাইবেন না কেউ।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*