ব্যাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে প্রবন্ধ রচনা। বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ এবং বোর্ড পরীক্ষায় এই প্রবন্ধ রচনা গুলো এসে থাকে। আপনারা অনেকেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এই প্রবন্ধ রচনা খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এই প্রবন্ধ রচনা গুলো খোঁজাখুঁজি করে থাকেন তারা অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এখানে বিভিন্ন প্রবন্ধ রচনা যত্ন সহকারে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা বেশিরভাগ সময় গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা গুলোকে আমাদের এই ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছি। আজকে আমরা যে প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করব সেটি হল:
শিষ্টাচার
অথবা সৌজন্যবোধ
প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা-শিষ্টাচার কি শিষ্টাচার এর লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য- বাল্যকাল শিষ্টাচার আয়ত্ত করার প্রকৃষ্ট সময়- শিষ্টাচার ও পারিবারিক পরিবেশ- ব্যক্তি জীবনে শিষ্টাচার এর গুরুত্ব- শিষ্টাচারী হবার উপায়- উপসংহার।
ভূমিকা: ভদ্র ও শালীনতাসম্পন্ন আচরণকেই আমরা সাধারণত শিষ্টাচার বলে থাকি। শিষ্টাচার মানুষের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে। শিষ্টাচার অনুষঙ্গটি কেবল মানুষের জন্যই প্রযোজ্য। কেননা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ তার আচরণ এর মাধ্যমেই তার প্রকৃত চরিত্রটাকে ফুল ফুটিয়ে তোলে।
শিষ্টাচার কি: শিষ্টাচার কথাটি “শিষ্ট” ও “আচার” কথা দুটির সমন্বিত রূপ। সৃষ্ট শব্দের অর্থ সঙ্গত মার্জিত সুন্দর বা গ্রহণযোগ্য। আর হাজার শব্দের অর্থ রীতি আচরণ বা অভিব্যক্তি। অতএব শিষ্টাচার বলতে আমরা বুঝি মানুষের সুন্দর বা ভদ্র জীবনাচরণকে। শিষ্টাচার অর্থ লোক সমাজে মানুষের চলাফেরা কথাবার্তা ও আচার-ব্যবহারের ভদ্র ও মার্জিত রূপ।
শিষ্টাচারের লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য: বংশ পরিচয় কিংবা পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন বা জ্ঞান দ্বারা প্রকৃত শিষ্টাচার বা আদব-কায়দা অর্জিত হয় না। অনেক পণ্ডিত ও জ্ঞানী ব্যাক্তিও তাদের অশিষ্ট ও অভদ্র আচরণের জন্য বিখ্যাত হয়েছেন। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের অপামর জনসাধারণের সাথে মার্জিত ও ভদ্র আচরণের মাধ্যমে সবার অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও সম্মানের পাত্র হাওয়াই শিষ্টাচার এর লক্ষণ। মার্জিত ও রুচিশীল আচরণ, নম্রতা, ভদ্রতা ইত্যাদি শিষ্টাচারের বৈশিষ্ট্য।
শিষ্টাচার ও পারিবারিক পরিবেশ: শিষ্টাচার পারিবারিক পরিবেশের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। কাজেই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে তাদের মার্জিত কথাবার্তা ও আচার আচরণের মাধ্যমে শিশুদের শিষ্টাচারের গুনাবলী শিক্ষা দিতে হবে। কারণ একজন শিশু শুরু থেকেই তার পরিবারের ওপরই বা তাদের ব্যবহারের বিষয়ে দেখেই তারা শিক্ষা লাভ করে। অভদ্র আচরণ ও আশীলন কথাবার্তা শিষ্টাচারের পরিপন্থী। শিষ্টাচার মানুষের অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আমাদের আচার আচরণ বা কথা বার্তায় যেন কখনো কোন রুপ অশিষ্টতা প্রকাশ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ব্যক্তি জীবনে শিষ্টাচারের গুরুত্ব: একজন মানুষ যখন কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেছে কিংবা কত টাকার মালিক হয়েছে তা বড় কথা নয় বরং সবচেয়ে বড় কথা হলো তাঁর সুন্দর আচরণ। কেননা অনেক ধনী ও বিদ্বান ব্যক্তি আচরণের সৃষ্টতার অভাবে মানুষের নিকট সম্মান পায় না। সবাই তাদের এড়িয়ে চলে। অপরদিকে আচরণে পরিশোধিত হলে যেকোনো ব্যক্তি মানুষের নিকট থেকে সম্মান, মর্যাদা ও সহানুভূতি লাভ করে থাকে। ভদ্র ও মার্জিত মানুষের সঙ্গ সবাই কামনা করে। জীবনের সকল ক্ষেত্রে শিষ্টাচারী ব্যক্তি সফলকাম হতে পারে।
শিষ্টাচারী হবার উপায়: মানুষের আচরণ তথা স্বভাব বৈশিষ্ট্য নির্ধারনে আর্থসামাজিক অবস্থা, শিক্ষার পারিবারিক পরিবেশ ও ক্ষেত্রবিশেষে বংশধারা ভূমিকা পালন করে থাকে। তা সত্ত্বেও একজন মানুষ নিজ চেষ্টায় সদাচারী হয়ে উঠতে পারে। সমাজে যারা জনপ্রিয় এবং সদাচারী বলে স্বীকৃত তাদের সাহচর্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে নিজেদের আচরণগত শুদ্ধতা আনায়ন করা যায়। মহান ব্যক্তিদের জীবনী পাঠ, ধর্মীয় বিধিবিধান এর অনুসরণ, ভালো বন্ধুর সঙ্গ ও পরামর্শ গ্রহণের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ শিষ্টাচারী হয়ে উঠতে পারে।
উপসংহার: প্রাচীনকালে আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অনিন্দ্যসুন্দর শিষ্টাচারের অধিকারী ছিল। তাদের নমনীয়তা সততা শ্রদ্ধাবোধ প্রভৃতির ছিল প্রশংসনীয়। একটি উন্নয়নশীল জাতির জন্য নিশ্চয়ই তা হতাশা ব্যঞ্জক যদি ছেলেমেয়েরা শিষ্টাচার বা শালীনতাবোধ না থাকে। নৈতিক অবক্ষয় থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার মানসে আমাদেরকে অবশ্যই শিষ্টাচার বা মার্জিত আদব কায়দায় অগ্রসর হতে হবে।
উপরের যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করা হলো তা অবশ্যই আপনাদের ভালো লাগবে এবং উপকারে আসবে। আপনাদের উপকারে আসলেই আমাদের এই রচনা লেখার স্বার্থকতা। তাই আপনারা বেশি বেশি করে আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং প্রতিদিন নিত্যনতুন শিক্ষার কোন টপিক নিয়ে আমরা আপনাদের সামনে হাজির হব।
Leave a Reply