রচনা: শ্রমের মর্যাদা বা জাতীয় উন্নয়নের শ্রমের গুরুত্ব

রচনা: শ্রমের মর্যাদা বা জাতীয় উন্নয়নের শ্রমের গুরুত্ব

প্রিয় শিক্ষার্থী আজকে আমরা যে রচনাটি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে আমাদের এই ওয়েবসাইটে সেটি হল:

শ্রমের মর্যাদা
বা জাতীয় উন্নয়নের শ্রমের গুরুত্ব

প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা- শ্রম এর প্রকারভেদ-শ্রমই উন্নতির মূল- মহামানবদের কাছে শ্রমের মর্যাদা- শ্রমের মর্যাদা ও গুরুত্ব-জাতীয় জীবনে শ্রমের গুরুত্ব-শ্রমবিমুখতার পরিণাম-কর্মের সুফল -উপসংহার।

ভূমিকা: যে কোন জাতির সার্বিক উন্নয়নে শ্রমের ভূমিকা অপরিসীম। মানব সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় শুধু শ্রমরেই জয় জয়কার। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রম করবে সে জাতি তত বেশি উন্নত হবে। আমরা দৃষ্টিভঙ্গি একটু পরিবর্তন করলেই দেখব জীব জগতের সমস্ত প্রাণীই পরিশ্রমী।

শ্রমের প্রকারভেদ: শ্রম দু’ই প্রকার।১. দৈহিক ও ২.মানসিক। মানবসমাজে দু’ ধরনের শ্রমেরই মূল্য আছে। যে শরীর খাটিয়ে পরিশ্রম করে, তাদের পরিশ্রমকে কায়িক বা দৈহিক শ্রম বলে। আর যে শ্রমে বুদ্ধিমত্তার খরচ হয় তাকে বলে মানসিক শ্রম।

শ্রমই উন্নতির মূল: পৃথিবীতে যে জাতি যত পরিশ্রমী সে জাতি তত উন্নত। ব্যক্তিজীবন কিংবা জাতীয় জীবনের সকল উন্নতির মূলে রয়েছে শ্রমশক্তি। সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের দিক থেকে পাশ্চাত্য দেশসমূহ যে এতটা উন্নতি সাধন করেছেন, তার পেছনেও রয়েছে শ্রমের অতুলনীয় অবদান।

মহামানবদের কাছে শ্রমের মর্যাদা: আমরা জানি বিশ্বের সকল মহামানবই শ্রমকে উপযুক্ত মর্যাদা দিয়েছেন। তাঁরা নিজেরাও তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে শ্রমসাধ্য কাজ করেছেন। আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সা) এর পবিত্র জীবনের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখব তিনি নিজে কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং কোন কাজকেই অমর্যাদাকর বলে মনে করেন নি।

শ্রমের মর্যাদা ও গুরুত্ব: মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে, এমনকি বেঁচে থাকতে হলে শ্রমের প্রয়োজন আছে। শ্রম ছাড়া সমাজ টিকতে পারেনা, দেশ উন্নত হতে পারে না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কার্লাই বলেছেন, “শ্রম পবিত্র ও সম্মানজনক কাজ”।

জাতীয় জীবনের শ্রমের গুরুত্ব: ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে দক্ষ কর্মীর হাতে পরিণত করতে পারলে তারা সমস্যা না হয়ে বরং শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। শত কোটি লোকের দেশ চীন তার বিপুল জনসংখ্যা কে পরিণত করেছে উন্নতির হাতিয়ারে। আমাদেরও হতে হবে কঠোর পরিশ্রমী। উৎপাদন ও বন্টন এ মনোদৈহিক শ্রম নিবিড়ভাবে বিনিয়োগ করতে পারলে ভোগের অধিকার আপনার থেকেই জন্মাবে। জাতীয় জীবনে শ্রমের গুরুত্বকে অস্বীকার করে আধুনিক সভ্যতা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

শ্রম বিমুখতার পরিণাম: যারা অদৃষ্টবাদী,অলস, শ্রমবিমুখ তারা জীবনের প্রতি পদক্ষেপে হয় ব্যর্থ। সম্পদ কিংবা সাফল্য এমনি এমনিই হস্তগত হয় না। নিরলস শ্রম আর সংগ্রাম করে তা অর্জন করতে হয়। যে জাতি অলস, কর্মবিমুখ তারা শিক্ষা ও সভ্যতার অগ্রসর নয়। বর্তমান সভ্য দুনিয়ায় যে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান রচনা করেছে তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে নিরন্তর সাধনার ইতিহাস। আলস্যে কালক্ষেপণ করলে তাদের ইতিহাস রচিত হত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির বদলে দারিদ্র ও ব্যর্থতার গ্লানি পূর্ণ হয়ে।

কর্মের সুফল: কর্মই কর্মীর জীবনের শ্রেষ্ঠ সাধনা। কর্মের মধ্যেই তার ব্যক্তিসত্তার পূর্ণ বিকাশ ঘটে। উদ্যমী পুরুষসিংহ নির্মাণ করে সুখ সভ্যতা। পরিশ্রমই খুলে দেয় জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির সিংহদ্বার।

উপসংহার: বৃক্ষ যেমন নীরব সাধনায় ফুল ফোটায়, ফল ফলায় মানুষকেও তেমনি নিষ্ঠাবান কর্মের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে ব্রতী হতে হবে। আজ আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক। সোনার দেশ গড়ায় আমাদের একমাত্র সাধনা। এজন্য পুরনো মূল্যবোধের অবসান ঘটিয়ে শ্রমের মূল্য দিতে হবে।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা আজকে যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করলাম তা অবশ্যই আপনাদের ভালো লাগবে। আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে চেষ্টা করেছি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রচনা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবার। আপনারা বেশি বেশি করে আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আগামীতে এ শিক্ষাবিষয়ক নতুন নতুন তথ্য উপভোগ করে থাকবেন।

About শাহরিয়ার হোসেন 4780 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*