আরবি বছরের ভেতরে রমজান মাস সবচাইতে মহিমান্বিত এবং গুরুত্বপূর্ণ মাস হবার কারণে প্রত্যেকটি মুসলমান এই মাস খুব সুন্দর ভাবে পালন করার চেষ্টা করে থাকেন। ধর্মীয় দিক থেকে এই মাসের গুরুত্ব অপরিসীম হওয়ার কারণে যেকোনো মানুষ এই মাস খুব সুন্দরভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে নিজেদের ভেতরের বাজে অভ্যাসগুলোকে পরিবর্তন করতে পারে। রমজান মাসের প্রত্যেকটি দিন ফজিলত পূর্ণ হওয়ার কারণে আপনারা যে কেউ এই দিনগুলো পালন করতে পারবেন এবং রমজান মাসের যে সকল আমল বা ইবাদত রয়েছে সেগুলো যদি আপনারা করতে পারেন তাহলে সবচাইতে ভালো হবে।
তবে আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন যে রমজান মাসের শেষ দিনে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে এবং এই বিশেষ আমলগুলো সম্পর্কে আপনাদেরকে ধারণা প্রদান করলে আপনি সেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে পারবেন। তাই রমজান মাসের শেষ দশ দিনের অথবা নাজাতের শেষ দশদিনের আপনারা আমলগুলো এখান থেকে জেনে নিয়ে সে অনুযায়ী পালন করুন।
মহান আল্লাহ পাক পবিত্র গ্রন্থ কোরআন মাজীদ নাযিল করার মধ্য দিয়ে রমজান মাসকে মহামৃত করেছেন এবং রমজান মাসে আমরা সিয়াম সাধনা করার মধ্য দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে আমরা আমাদের জীবনকে পরিচালিত করতে পারি। তাছাড়া রমজান মাসের প্রত্যেকটি অভ্যাস যদি আমরা আমাদের জীবনকে প্রতিফলিত করতে পারি তাহলে দেখা যাবে যে বছরের 11 টি মাস আমরা ইসলামিক রীতি-নীতির মধ্য দিয়ে চলতে পারছি। যেহেতু ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা সেহেতু এই মাসের মধ্য দিয়ে আমরা যদি আমাদের জীবনকে প্রতিফলিত করতে পারি তাহলে দেখা যাবে যে আমাদের জীবন সুন্দর হবে এবং ধর্মীয় বিধিনিষেধ অনুযায়ী আমাদের জীবন চালিত হচ্ছে বলে আমরা আল্লাহ পাকের নিকট হাসিল করতে পারব।
আমরা যখন রমজান মাসের আমল সম্পর্কে জানতে চাই তখন বলব যে এখানের আমল গুলোর ভেতরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার পাশাপাশি সিয়াম সাধনা করা। সেইসাথে তারাবির নামাজ পড়া সুন্নত এবং আপনি যদি প্রত্যেকটি কাজ সুন্দরভাবে করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য আপনার ভেতরে চলে এসেছে। তবে রমজান মাসের শেষ ১০ দিন অত্যন্ত মহিমান্বিত হয়েছে এবং শেষ ১০ দিনের ভেতরে লাইলাতুল কদরের দিনে পবিত্র কোরআন মাজীদ নাযিল হয়েছে বলে এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনারা যখন শেষ দশ দিনের আমল সম্পর্কে জানতে চাইবেন তখন বলব যে এই আমল গুলোর ভেতরে যে সকল আমলগুলো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেগুলো আপনারা এখান থেকে জেনে নিবেন।
প্রত্যেকটি মুসলমানকে হাজার মাসের চেয়েও সর্বোত্তম মাস হিসেবে লাইলাতুল কদরের এই বিশেষ রাতকে বেছে নিতে হবে। সাধারণত আমাদের ভেতরে যে ধারণা রয়েছে অর্থাৎ আমরা যে ২৭ তারিখে লাইলাতুল কদরের রাত হিসেবে খুঁজে থাকে তার ভেতরে এটি থাকবে কিনা আমরা কেউ জানি না বলে শেষ দশকের প্রত্যেকটি বেজোড় রাত আমরা জাগার চেষ্টা করব। কিন্তু কোনভাবে যদি এই রাত পার হয়ে চলে যাই অথবা কোন ভাবে এই রাত যদি আমার হাতের সুযোগ না আসে তার জন্য যদি আমরা রমজান মাসের শেষ দশ দিন লাইলাতুল কদরকে খোঁজার জন্য প্রতিনিয়ত জাগতে পারি এবং ইবাদত বন্ধই করতে পারি তাহলে দেখা যাবে যে বিশেষ একটি দিন আমরা পেয়ে গিয়েছি।
তাছাড়া রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হল ইতিকাফ করা। নিজেকে মহান আল্লাহ পাকের কাছে সুখী হওয়ার জন্য এবং মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য আপনারা যখন ১০ দিনের জন্য অর্থাৎ শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা পর্যন্ত এতেকাফে চলে যাবেন তখন সেটা হবে এর চাইতে বড় ইবাদত। এছাড়া আপনারা যখন রমজান মাসের প্রত্যেকটি কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করবেন তখন শাওয়াল মাসে আপনারা ঈদের নামাজ আদায় করার পূর্বে এই শেষ দশ দিনের ভেতরে নির্দিষ্ট একটা দিনে আপনারা অবশ্যই সদকাতুল ফিতর আদায় করবেন। আপনাদের এলাকায় যে নির্ধারিত পরিমাণ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা প্রদান করার মধ্যে দিয়ে আপনি রমজান মাসের এই সকল বিশেষ আমল করতে পারেন।
Leave a Reply