প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ আপনাদের আমাদের এই ওয়েবসাইটে স্বাগত জানাই। বরাবরের মতো আজও আমরা একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব। এই ভাব-সম্প্রসারণ টি অষ্টম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেশ উপযোগী একটি ভাব সম্প্রসারণ। দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ করোনাকালীন সময় বন্ধ থাকাতে আপনারা অনেকে পিছিয়ে পড়েছেন পড়ালেখা থেকে। তাই আমরা আমাদের ওয়েবসাইট পেজে চেষ্টা করছি নতুন নতুন ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
আশা করি আপনাদের অবশ্যই ভালো লাগবে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে পড়ালেখা এখন সবকিছুই অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছে। অনলাইনে এখন সব বিষয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে। তাই আমরাও চেষ্টা করেছি আপনাদের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলো এখানে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করার। তো যাই হোক আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ টি নিয়ে আলোচনা করব তা নিম্নে দেয়া হল:
শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির/ লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির।
মূলভাব: পরের মহৎ উপকার স্বীকার না করে নিজের অতীতকে বড় করে প্রচার করায় অকৃতজ্ঞ লোকের বৈশিষ্ট্য। অকৃতজ্ঞরা অপরের সামান্য উপকার করলে তা গর্ব ভরে প্রচার করে বেড়ায়। যারা প্রকৃত অর্থে দানশীল পরোপকারী তারা নিজের উপকারের কোন হিসাব রাখেন না। দেশ ও দশের মঙ্গলের জন্য তারা নিবেদিত প্রাণ।
সম্প্রসারিত ভাব: পুকুরের বিশাল জলরাশির মধ্যে শৈবালের জন্ম হয়। জলাশয় এর মধ্যেই তার জন্ম, সেখানেই তার অবস্থান। সেই জলকে অবলম্বন করেই শৈবাল বেঁচে থাকে। শৈবালের অস্তিত্ব পানিতে ভাসমান থেকেই প্রকাশ পায়। তার কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত সেই দিঘীর পানির প্রতি। কিন্তু সে তা না করে অকৃতজ্ঞ মানসিকতার পরিচয় দেয় নিজের বাহাদুরি প্রকাশের মাধ্যমে। শীতের রাতে শৈবালের বুকে সামান্য শিশির জমে। এই শিশির বিন্দু একসময় দীঘির পানিতে পড়ে তা মিলিয়ে যায়। তখন শৈবাল অহংকার করে এই বলে যে সে পুকুরে এক ফোটা পানি দান করেছে। তখন শৈবাল তার উপকারের কথা জানিয়ে দিয়ে হীনমন্যতার পরিচয় দেয়।
বাস্তব জীবনে ও বিচিত্র মানবজগতে এর প্রতিফলন দেখা যায়। পৃথিবীতে মহৎ লোকেরা আমৃত্যু নীরবে দান করে যান। কিন্তু সংকীর্ণমনা, নীচুমনা ব্যক্তিরা অন্যের দান কেবল অস্বীকার করে না, কাউকে বিন্দুমাত্র উপকার করলে তা সদম্ভে শতমুখে প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
আমাদের সমাজে শৈবাল এর মতো হীন্যপরিচয় মানুষের অভাব নেই। তারা সামান্য একটু উপকার করলেই তা শতমুখে প্রচার করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
বর্তমানে আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় চোখ মেলেই দেখতে পারি একজন গরীব মানুষকে কিছু খাদ্য অথবা অর্থ সহায়তা দান করছে সেখানে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন লোকের উপস্থিতি। এটা সবাই ফলাও করে প্রচার করতেছে। কাউকে বিন্দুমাত্র উপকার করলে তা সদম্ভে শতমুখে প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এভাবে আত্মপ্রচারের ফলে তাদের ক্ষুদ্র দানের সামান্য মহিমাটুকুও ম্লান হয়ে যায়।
শৈবালের মত বাস্তবে মানব সমাজে এমন অনেক হীন চরিত্রের লোক দেখা যায়। যারা সামান্য পরিমাণ অন্যের উপকারের কথা অস্বীকার করে অথচ কাউকে বিন্দুমাত্র উপকার করলে সেটা শতমুখে প্রচার করে থাকে।
মন্তব্য: উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, সমাজে যারা মহৎ ব্যক্তি তারা অন্যকে উপকার করতে পারলে নিজেকে গর্ববোধ মনে করেন।
আজকে যে ভাব-সম্প্রসারণ তা নিয়ে আলোচনা করা হল সেটা আপনাদের পাঠ্যপুস্তক এর সহায়ক হিসেবে কাজ করবে । আপনারা বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকেও এই ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আরো পড়াশোনা করতে পারবেন। আমরা চেষ্টা করেছি পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করার যাতে আপনারা আরও অনেক কিছু জানতে পারেন।
আমাদের এই ওয়েবসাইটের পেজে আপনারা বিভিন্ন ভাব সম্প্রসারণ সম্পর্কে জানতে পারছেন। এর পাশাপাশি ভাব সম্প্রসারণ এর আরও তথ্য পেতে চান তাহলে বাংলা ব্যাকরণ এর সহায়তা নিতে পারেন। আমরা চেষ্টা করেছি শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়গুলোকে সহজ ও সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করার। তাই আপনারা এই ওয়েবসাইট বেশি বেশি করে ভিজিট করুন এবং শিক্ষা সম্পর্কে আপডেট বিষয় সম্পর্কে জানতে থাকুন। আজ এ পর্যন্তই সকলকে ধন্যবাদ।
Leave a Reply