স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম

স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম

আপনারা যারা স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অবগত হতে চান তাদের জন্য আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে যে সকল নিয়মগুলো অনুসরণ করে তালাক দেওয়া যায় তা জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। আমাদের দেশের অনেক মানুষ রয়েছেন যারা স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম জানেন না এবং মুখে মুখে তালাক দিয়ে সেই তালাক এর কার্যকর করতে চান। কিন্তু আপনার বিয়ে যখন একজন কাজীর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সেহেতু আপনাকে তালাক দিতে হলেও তাদের মাধ্যমে অথবা অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে দিতে হবে।

তাই কেউ যদি সংসার জীবনে সুখী না হয়ে থাকেন এবং কেউ যদি নিজের জীবনকে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে পরিচালিত করতে না চান তাহলে হয়তো সংসার জীবনের ইতি টানতে যান। আর এই ক্ষেত্রে উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে তালাক যদি দিতে চান তাহলে কোন নিয়ম অনুসরণ করে দিতে হবে তা আজকে জেনে নিবেন।

খুব তেতো হলেও সত্য যে আমাদের সমাজে বর্তমান সময়ের অনেক মেয়েরা বিয়ের পরে ছেলের পরিবারকে খুব একটা গ্রহণ করতে চায় না। অধিকাংশ পরিবারের মেয়ের মানসিকতা থাকে এরকম যে বিয়ের পরে শুধু স্বামী সন্তান নিয়ে আলাদা ভাবে ঘর করবে। তারা হয়তো বিয়ের আগে থেকেই এই ধরনের স্বপ্ন দেখে থাকে যে বিয়ের পরে স্বামীকে নিয়ে আলাদা সংসার করবে এবং নিজের মতো করে জীবন পরিচালনা করবে। কিন্তু আজকে যে স্বামীকে নিয়ে আপনি সংসার করছেন সেই স্বামী একজন মায়ের সন্তান এবং একজন বাবার পুত্র সন্তান। তারা অনেক কষ্ট করে লালন পালন করেছেন এবং অনেক কষ্ট করে বড় করেছেন।

এখন কোন মেয়ে যদি তার স্বামীকে নিজের অধিকার এবং সম্পদ বলে দাবি করে এবং পরিবারের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক বিচ্ছেদ করার জন্য অথবা যে সকল সম্পর্ক থাকা উচিত সেগুলো রাখার জন্য বারণ করতে থাকে তাহলে সেই পরিবারে অশান্তি নেমে আসবে। তারপরেও বর্তমান সময়ে অনলাইনের যুগে অনেক স্ত্রী আছেন যারা খারাপ পথে পরিচালিত হচ্ছেন এবং পরকীয়া থেকে শুরু করে অনেক অন্যায় কাজে জড়িত হয়ে পড়ছেন। ছেলের পরিবারকে মেনে না নেওয়া অথবা নিজের ইচ্ছা মত জীবন পরিচালনা করা এ বিষয়গুলো ছেলের পরিবারের প্রভাব ফেলে। আর যদি বাইরের কোন ছেলের সাথে যে কোন ভাবে যদি পরকীয়ার সম্পর্ক থাকে তাহলে সেই পরিবার থেকে স্বাভাবিকভাবেই স্ত্রীকে তালাক দেওয়া উচিত।

তাই আপনি যখন স্ত্রীকে তালাক দিবেন তখন আপনাকে সর্ব প্রথমে যে বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে সেটা হল স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ হয়েছে কিনা। দেনমোহর যদি পরিশোধ হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী বাপের বাড়ি থাকা অবস্থায় আপনারা নোটিশের মাধ্যমে কোর্টের ভিত্তিতে তালাক যেমন দিতে পারবেন তেমনি ভাবে তাদের পরিবারকে একজন কাজির কাছে উপস্থিত রেখে তালাকের বইতে তথ্য প্রদান করে সকলের সম্মতিক্রমে তালাক দিতে পারবেন।

তাই দেনমোহর যদি পরিশোধ করা হয়ে থাকে অথবা আপনারা যদি তালাকের অনুষ্ঠানে দেনমোহর পরিশোধ করতে চান তাহলে কোন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হওয়ার কথা বলবেন। তাছাড়া বিয়ের অনুষ্ঠানে যেসকল স্বার্থে ছিল তারা উপস্থিত থাকবেন যাতে করে এই তালাক অনুষ্ঠানটি খুব সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়ে যায়।

কাজি তার তালাক নিবন্ধন এর বইতে সকল তথ্য লিপিবদ্ধ করে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর গ্রহণ করবেন। এভাবে তালাকের যাবতীয় তথ্যগুলো সম্পন্ন করে এই অনুষ্ঠান শেষ হবে এবং দেনমোহর পরিশোধ করার ভেতর দিয়ে যাবতীয় কাজ শেষ করে তালাক সম্পন্ন হয়ে যাবে। এর পরবর্তীতে কাজী ছেলেপক্ষ এবং মেয়ে পক্ষকে তালাকের একটি নকল কপি প্রদান করবে এবং তাদের স্থানীয় সরকার বিভাগকে এটার নকল প্রেরণ করবে। তারপরও আপনারা যখন কোর্টের মাধ্যমে তালাক প্রদান করতে চাইবেন অথবা উকিলের মাধ্যমে তালাক প্রদান করতে চাইবেন তখন আপনাকে এ বিষয়ে একজন উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তিনি আপনাদের থেকে যে সকল তথ্য চাইবেন সেগুলো আপনারা প্রদান করবেন।

যদি আপনার স্ত্রী অথবা তাদের পরিবার তালাক গ্রহণ করতে রাজি হয়ে থাকে তাহলে কোর্টের মাধ্যমে তালাকের নোটিশ পাঠিয়ে দিবেন। ডাকযোগে সেই তালাকের কাগজ সেখানে পৌঁছে যাবে এবং তারা যদি তালাকের কাগজে স্বাক্ষর করে এবং এই তালাক যদি মেনে নেয় তাহলে তালাক হয়ে যাবে। যদি দেনমোহর সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তারা হয়তো কোর্টে এ বিষয়ে মীমাংসার জন্য যেতে পারে এবং আপনারা মীমাংসার মাধ্যমে দেনমোহর পরিশোধ করতে পারেন।

কোর্টের মাধ্যমে তালাক প্রদান করলে হয়তো অনেক সময় ঝামেলা হতে পারে অথবা অনেক টাকা পয়সা খরচ হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে আপনারা কাজীর মাধ্যমে এই তালাক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে অল্প খরচে এবং উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে সম্পর্কের অবসান ঘটাতে পারবেন।

About শাহরিয়ার হোসেন 4781 Articles
Shahriar1.com ওয়েবসাইটে আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার সবকিছুই পাবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*