অতীতে যখন ভিডিও কলের বা ইন্টারনেটের ব্যবস্থা ছিলনা তখন দেখা গিয়েছে টেলিফোনের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট এবং ক্যামেরা ব্যবস্থা থাকার কারণে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অথবা অন্য কোন ডিভাইস দিয়ে ভিডিও কলে বিবাহ সম্পন্ন হয়ে থাকছে। প্রকৃতপক্ষে বিবাহ হলো এমন একটি খুশির অনুষ্ঠান যার মাধ্যমে দুটো পরিবার একত্রিত হবে এবং দুই পরিবারের ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তান বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে। এই বিবাহ কে কেন্দ্র করে অনেক জায়গায় অনেক ধরনের বিভিন্ন ধরনের উৎসব বা সংস্কৃতি পালিত হয়ে থাকে।
কিন্তু কোন কারণে যদি ছেলে অথবা মেয়ে দেশের বাইরে থাকে অথবা বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকতে পারে তাহলে হয়তো অনেকেই ভিডিও কলে বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার জন্য সম্মতি প্রদান করে এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে তিনবার কবুল বলে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে। তাই ভিডিও কলে বিবাহ করা কি জায়েজ সে সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করব আমাদের বাস্তবতা অভিজ্ঞতা এবং বাস্তবতার নিরিখে। তাই আপনি যদি ভিডিও কলে বিবাহ কি জায়েজ এই বিষয়টা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে সরাসরি নিচের দিকে চলে যান এবং সেখান থেকে জেনে নিন ভিডিও কলে বিবাহ হলে সেটা কতটা শরীয়ত সম্মত এবং জায়েজ।
বিবাহের কিছু শর্ত রয়েছে এবং এই শর্তের প্রধান শর্ত হলো ছেলে এবং মেয়ে কে এই বিবাহের সম্মতি প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে বিয়ের জন্য যখন কথা কথা বলবেন তখন কাবিননামা এবং দেনমোহরের বিষয়গুলো উল্লেখ করে নিবেন যাতে বিবাহের অনুষ্ঠানে কোন ধরনের সমস্যা না হয়। বিবাহ করানোর জন্য দুইটি ধাপ থাকে এবং এই দুইটি ধাপের প্রথম ধাপ হলো স্থানীয় ইমাম অথবা মাওলানা করতেই বিবাহের অনুষ্ঠান পরিচালনা করা। তিনি ধর্মীয় এবং অন্যান্য নিয়ম অনুসরণ করে মহান সৃষ্টিকর্তার নামে এ বিবাহের অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন এবং সাক্ষীর উপস্থিতিতে ছেলে এবং মেয়ের কবুল বলা শুনবেন।
অর্থাৎ বিবাহের ওই অনুষ্ঠানে শরীয়া মোতাবেক কবুল বলছে কিনা এ বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে এবং এই বিষয়গুলো ছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে থাকে। বিবাহের জন্য সরকারিভাবে কাবিননামায় তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং এই ক্ষেত্রে কাজি এই কাজটি সম্পন্ন করে থাকেন। তাই আপনি যখন কোন ব্যক্তির বিবাহ ভিডিও কলের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয় গুলো দেখবেন তখন সেখানে কাবিননামা হচ্ছে কিনা অথবা কাজের মাধ্যমেই বিবাহ অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিনা সে বিষয়গুলো দেখতে হবে।
কাবিননামা অথবা কাজির খাতায় অর্থাৎ সরকারি খাতায় বিবাহ মাওলানা কর্তিক পড়ানো হয়ে থাকলেও বিবাহ পড়ানোর 1 মাসের ভিতর সরকারি নিবন্ধন করতে হবে। আর সরকারি নিবন্ধন করতে হলে পাত্র এবং পাত্রীর উভয়ের স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে। তাই ভিডিও কলের মাধ্যমে দূর-দূরান্তের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে থাকলেও যে যেখানেই থাকুক না কেন তাদেরকে এক মাসের ভেতরে এই কাবিননামা সম্পন্ন করতে হবে এবং কাবিননামার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বিবাহের এই ধাপ অতিক্রম করতে হবে। তবে বিভিন্ন মাওলানা বলে থাকেন যে বিবাহের এই অনুষ্ঠানে উভয়পক্ষ উপস্থিত থাকলে সরাসরি তাদের ভেতরে অন্ত্যমিলের সৃষ্টি হয় এবং আন্তরিকতা সৃষ্টি হওয়ার মধ্য দিয়ে দুই পরিবারের যেন সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং পাত্র এবং পাত্রীর ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
Leave a Reply