বিখ্যাত দার্শনিক ম্যাকিয়াভেলি ধর্ম ও নৈতিকতা সম্পর্কে যে ধারণা ব্যক্ত করেছেন তা আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপনি যদি ধর্ম এবং নৈতিকতা সম্পর্কে ম্যাকিয়াভেলির ধারণা জানতে চান তাহলে এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নিন। ইটালির মধ্যযুগে জন্মগ্রহণ করার নিকোলা মেকিয়াভেলি ধর্ম এবং নৈতিকতা সম্পর্কে বিশেষ কিছু ধারণা প্রদান করেছেন যা সেই সময়ে বিভিন্ন চিন্তা-চেতনাকে ভেঙ্গে দেয় এবং নতুন ভাবে মানুষকে ভাবতে শেখায়।
তিনি ধর্ম সম্পর্কে মানুষকে যে সকল ধারনা প্রদান করেছেন সেগুলো হল নিম্নরূপ: ম্যাকিয়াভেলির মতে ধর্ম এমন একটা প্রতিষ্ঠান যেটা একজন মানুষের মনের ভেতরের সত্যিকারের বিকাশ ঘটাবে এবং এটা কখনোই একজন মানুষকে রাষ্ট্রের প্রতি ধারণা প্রদান করবে না বরং এটা মানুষকে বাস্তববাদী কর্ম থেকে দূরে সরিয়ে রেখে আত্মিক বিকাশের জন্য সুযোগ প্রদান করবে। তাছাড়া তিনি রাষ্ট্র ব্যাপারে যে ধারণা প্রদান করেছেন তার প্রধান বক্তব্য হলো যে ধর্ম নয় বরং রাষ্ট্রই বড়।
তিনি ধর্মের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা যেমন করেছেন তেমনি ধর্ম পরলৌকিক ব্যাপার এ সম্পর্কে বিশেষ কিছু ধারণা প্রদান করেছেন যা একজন সাধারণ মানুষের মনে রাষ্ট্র এবং ধর্ম সম্পর্কে আলাদা করে চিন্তা করার সুযোগ প্রদান করবে। তাছাড়া মেকিয়াভেলের নৈতিকতা সম্পর্কে যে ধারণা রয়েছে সেগুলো নিচে আমরা আলোচনা করব এবং এ সম্পর্কে জানতে আপনারা শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ম্যাকিয়াভেলি নৈতিকতার সম্পর্কে যে ধারণা প্রদান করেছেন তা হল যে নৈতিকতা মানব জীবনের একটি আলাদা অংশ এবং এটাকে তিনি আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যায়িত করতে চেয়েছেন। মানুষের জীবনে সত্য এবং মিথ্যার যে বিষয়গুলো থাকে সেগুলো নৈতিকতা দিয়ে তিনি আলাদা করার চেষ্টা করেছেন এবং মনে করেছেন এই নৈতিকতা বিষয়টি সকলের ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযোজ্য নয়।
তাছাড়া তিনি এই আলোচনায় নৈতিকতা কে দুই ভাগে ভাগ করেছেন এবং একটি নৈতিকতা হলো মানুষের আদর্শ নৈতিকতা এবং আরেকটি নৈতিকতা হলো মানুষের ছলনাময়ী নৈতিকতা বা সরকারি নীতিকথা। অর্থাৎ যে নৈতিকতা মানুষের আত্মিক বিকাশে সাহায্য করে অথবা যেই নৈতিকতা মানুষকে মানবিক দিক থেকে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে সেটা হল আদর্শ নৈতিকতা।
আর ছলনাময়ী নৈতিকতা হলো সেসময়ের সরকারদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিমূলক বাক্য এবং কাজের সঙ্গে কথার মিল না থাকা। এছাড়াও তিনি নৈতিকতা ও শাসক সম্পর্কে কি ধরনের সম্পর্ক থাকা উচিত তা আলোচনা করেছেন এবং এ বিষয়ে সমালোচনা যেমন করেছেন তেমনি তার স্ববিরোধী বক্তব্য সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি এখানে বৈজ্ঞানিক নির্লিপ্ততা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং পক্ষপাত মূলক বিষয় যেগুলো থাকে সে সম্পর্কে সকলের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
এ সকল ধারনার মাধ্যমে তিনি সবসময়ই মানুষের ভেতরে যে ধারণা ছিল সেই ধারণার মূল উৎপাদন করে ধর্ম এবং রাষ্ট্রকে আলাদাভাবে সকলের সামনে তুলে ধরেছেন এবং ধর্ম মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং রাষ্ট্র প্রত্যেকটি মানুষের সমাধিকার বিষয়েই সম্পর্কিত একটি ব্যাপার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আমরা মনে করি যে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ধর্ম ও নৈতিকতা সম্পর্কে মেকিয়াবেলের ধারণা বুঝতে পেরেছেন।
Leave a Reply