
বাংলাদেশযে বিশ্বের অন্য সকল দেশের সাথে পাল্ল দিয়ে এগিয়ে চলেছে এ কথা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের মানুষের জীবন এখন প্রযুক্তির উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। কত কয়েক বছরে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক উন্নতি সাধন হয়েছে। এখন সরকারি প্রত্যেকটি সেবাই ঘরে বসে অনলাইনে নেওয়া সম্ভব। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার এই বর্তমান সময়েই পাসপোর্ট প্রদান করছে, নতুন সকল আবেদনকারীকে।
সরকারের লক্ষ্য হলো দেশের সকল পাসপোর্টধারীকে ই পাসপোর্ট প্রদান করা। ই পাসপোর্ট আগের এম. আর. পি এর চেয়ে বহুগুণে সুরক্ষিত ও সহজেই এই পাসপোর্টধারীর যেকোন তথ্য প্রমাণ বের করা যায়। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও এখনো এই ই পাসপোর্ট প্রদান করা শুরু করেনি, সেজন্য বলা যায় এই ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এই সমসাময়িক সময় হতে ভবিষ্যৎ পর্যন্ত যেসকল আবেদনকারী পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবে সকলকেই ই পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। পাসপোর্ট এর জন্য যেন দেশের সকল এলাকার মানুষ সহজেই আবেদন করতে পারে সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেকটি জেলা শহরে পাসপোর্ট অফিস স্থাপন করেছে।
২০২১ সালে ই পাসপোর্ট প্রদান করা শুরু হলেও তা মাত্র কয়েকটি পাসপোর্ট অফিসে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিলো। কিন্তু ১০ নভেম্বর, ২০২১ তারিখ থেকে দেশের সকল জেলা পাসপোর্ট অফিস থেকে ই পাসপোর্ট প্রদান করা শুরু হয়েছে। তার মানে বর্তমান সময়ে দেশের যেকোন পাসপোর্ট অফিস থেকেই ই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব।
ই পাসপোর্ট পেতে হলে কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপ সতর্কতার সাথে অনুসরণ করতে হয়। এই ধাপগুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারলে পাসপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। প্রথমেই পাসপোর্ট এর আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে৷ ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফরম অনলাইনে পাওয়া যাবে এবং নিকটস্থ যেকোনো পাসপোর্ট অফিসেও এই আবেদন ফর্ম পাওয়া যাবে। আবেদন ফরম পূরণের পর নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে বেসরকারি বা সরকারি কোন ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে।
কিন্তু আজকাল অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমেও এই ফি খুব সহজেই প্রদান করা যায়। যেভাবে ইচ্ছা টাকা পরিশোধের পর, পূরণকৃত ফরম আবেদন ফি জমাদানের রশিদসহ এবং আরও প্রয়োজনীয় কাগজসহ জমা দিতে হবে। সকল কাগজ জমা দেওয়া হয়ে গেলে পাসপোর্ট অফিস থেকে নির্দিষ্ট একটি তারিখ দেওয়া হবে আবেদনকারীর আংগুলের ছাপ ও ছবি তোলার জন্য। সেই নির্দিষ্ট তারিখে আবেদনকারীকে অবশ্যই যোগাযোগ করতে হবে।
এরই মাঝে আবার পুলিশ ভ্যারিফিকেশন এর কাজ শুরু হবে। পুলিশ আবেদনকারীর দেওয়া ঠিকানায় যোগাযোগ করে খতিয়ে দেখবে যে, আবেদন ফরমে দেওয়া সকল তথ্য ঠিক আছে কিনা। সঠিক তথ্য প্রমাণ দেওয়া থাকলে নির্দিষ্ট সময়েই পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে তথ্যে গড়মিল থাকলে আবেদনকারীর আবেদন বাতিল পর্যন্ত হতে পারে। তাই আবেদন ফরমটি পূরণের সময় সব সত্য তথ্য দিতে হবে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ডেলিভারির সময়, পাসপোর্ট এর পাতার সংখ্যা ও মেয়াদের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকার পাসপোর্ট প্রদান করা হয় এবং প্রত্যেক পাসপোর্ট এর ফি আলাদা। তাই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করলে, আবেদন ফরমে উল্লেখ করতে হবে আবেদনকারী কয়দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ডেলিভারি চান। ফি প্রদানের সময় আবেদনকারীর যে ধরণের পাসপোর্ট চান সেই অনুযায়ী ফি প্রদান করতে হবে।
কেউ যদি অতি জরুরী সেবায় পাসপোর্ট ডেলিভারি পেতে চান তাহলে প্রথমেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর ব্যবস্থা করতে হবে। নিকটস্থ যেকোন থানায় যোগাযোগ করলেই এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বিষয়ক সকল তথ্য পাওয়া যাবে। তবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কেউ অতি জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
এটা আমাদের সকলেরই জানা যে, পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌড়াত্ম খুবই বেশি। যদিও ইদানিং সময়ে এই দালালের প্রকোপ কমেছে কিন্তু তারপরও দালালের হাত থেকে আমাদের সাবধান হতে হবে। দালালের কথা না শুনে, সরকারি নিয়ম মেনে আবেদন করলে অতি সহজেই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব।
Leave a Reply