একটা হাদিসে পাওয়া যায় এমনটা যে একজন সাহাবি নবীজি (স) কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে কাকে সবচেয়ে বেশি সম্মান করতে হবে। নীজি (স) বলেছিলেন মাকে। আবার সেই সাহাবী বলেছিলেন তারপর কাকে। তখন নবীজি (স) বলেছিলেন মাকে। তারপর আবার সেই সাহাবী বলেছিলেন তারপর কাকে। তখনও নবীজি (স) তৃতীয়বারও বলেছিলেন মাকে। এবং চতুর্থবারে বলেছিলেন বাবাকে৷ তারমানে তিনবার মা তারপর একবার বাবার কথা বলেছিলেন। এখান থেকেই বুঝতে হবে মায়ের গুরুত্ব কতটা বেশি।
মা। অনেক ছোট্ট একটি শব্দ। একটি মাত্র অক্ষরের নাম। কিন্তু এই নামটি মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে আপন। এই নামের মাধুর্য্য যে কতটা বেশি তা বলে বা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। একজন সন্তানের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তার মা। মা ছাড়া আসলে একজন সন্তানের কাছে অন্য কিছু এতটা মূল্যবান হতে পারে বলে আমি মনে করি না। বলা হয়ে থাকে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত।
মা কথাটি মনে হলে সর্বপ্রথম মনে পড়ে মায়ের কষ্টের কথা। ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে মায়েরা আমাদের লালন পালন করে তুলে। শত কষ্ট সহ্য করেও তারা আমাদের মঙ্গলের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যায় মুখ বুজে। ছোটবেলায় আমরা অনেকেই মায়ের কষ্টের কথা গ্রাহ্য করি না। অনেক আবদার করি যে আবদার গুলো মিটানোর জন্য মাকে অনেক কষ্ট করতে হয়।
আবার কখনো কখনো কোন কারনে যদি মায়েরা আমাদের আবদারগুলো মেটাতে না পারে তাহলে আমরা রাগারাগি করে ঝামেলা করি। কিন্তু এটা মাথায় রাখি না যে কোন মা ই চায় না তার সন্তানের আবদার কে অপূর্ণ রাখতে। তাই আমাদের যে কোন কিছু আবদার করার আগে সেগুলো মায়েরা পূরণ করতে পারবে কিনা এই বিষয়টা ভাবা উচিত।
যেকোন বিপদে যাকে সবার আগে পাওয়া যায় সে হচ্ছে মা। যেকোন সফলতায় যে সবচেয়ে বেশি খুশি হয় সেও মা। সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসা কখনো কমে না। সন্তানের মঙ্গলের জন্য মায়ের যে কি পরিশ্রম তা কখনো পরিমাপ করা সম্ভব হয় না। সন্তান জন্মদান থেকে শুরু করে সেই সন্তানের ভালো – মন্দ সবকিছুতে মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। মাকে ছাড়া কোন সন্তানের জীবনই পরিপূর্ণ সুখী হতে পারে না। সন্তানের জীবনে মাযের ভালোবাসা হলো সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। তাই একজন সন্তান হিসেবে তার জীবনে সবচেযে গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি হিসেবে মাকে রাখা উচিত।
মাকে ছাড়া কোন পরিবারই পূর্ণতা পায় না। একটি সংসারকে মা যতটা আগলে রাখতে পারে, ততটা সুন্দর করে কেউ আগলে রাখতে পারে না৷ মা ই সবার ভালো- মন্দের বিষয়টি সবচেয়ে ভালো বুঝে৷ মায়ের মতো করে কেউ কখনো ভালোবাসতে পারে না৷ যত্ন নিতে পারে না। একজন সন্তানের কাছে সবচেয়ে ভরসার স্থল হলো তার মা৷ তাই মাকে কখনো কোন অবস্থাতেই কষ্ট দেওয়া উচিত না।
সন্তান যেমনই হোক না কেন। হোক সে পাগল অথবা অসুস্থ। সবাই তাকে ছেড়ে গেলেও মা কখনো তাকে ছেড়ে যায় না। যত কঠিক পরিস্থিতিই হোক না কেন মা সব সময় সন্তানকে আগলে রাখে। তাই প্রত্যেকটা সন্তানের উচিত মা যেমন ছোটবেলায় তাকে আগলে রেখেছে, ঠিক তেমন করেই শেষ বয়সে মাকেও আগলে রাখা। মায়ের সেবা করা। মাকে ভালো রাখা, তাকে ভালোবাসা। আর তাই তাকে বিদ্ধাশ্রমে না পাঠিয়ে তার যত্ন নিতে হবে। সবার সাথে বাসায় রাখতে হবে।
আসলে সামান্য কয়েকটি কথা বা বাক্যের মাধ্যমে মা সম্পর্কে বলে শেষ করা সম্ভব নয়। কেননা মা তো মা ই। এই পৃথিবীতে যার মা নেই আমার মনে হয় সে সবচেযে দুঃখী মানুষ। তাই সময় থাকতেই মায়ের সেবা করতে হবে। মাকে ভালোবাসতে হবে আর পর্যাপ্ত পরিমানে সম্মানও করতে হবে।
Leave a Reply