
বান্দা সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, সালাতের মাধ্যমে বান্দা সিজদায় ফিসফিসিয়ে আল্লাহর কাছে সমস্ত মান-অভিমান,চাওয়া- পাওয়া ব্যক্ত করে আর আসমান থেকে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বান্দার কথা শুনেন। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক নরনারীর উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করা হয়েছে, মৃত্যুর পরে বান্দার থেকে আল্লাহ তায়ালা প্রতি ওয়াক্ত সালাতের হিসাব নেবেন। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা এবং পরিশুদ্ধতার সহিত সহিহ সুদ্ধভাবে সালাত আদায় করা।
সালাতের পূর্বশর্ত হচ্ছে শুদ্ধভাবে ওযু করা। ওযু ভুল হইলে সালাত সহিহ হবেনা সেকারণে নামাজ আদায় এর পূর্বে শুদ্ধভাবে ওযু করতে হবে। অনেকেই জানেন না শুদ্ধ ভাবে ওযুর নিয়মাবলী,ওযুর দোয়া,সঠিক নিয়ম। তাদের সুবিধার্থে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছি ওযুর দোয়া,ওযুর নিয়ত ও নিয়মাবলী। আপনি কি ওযুর নিয়মাবলী জানতে আগ্রহী তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিয়মাবলী ডাউনলোড করে নিন এবং জেনে নিন শুদ্ধভাবে ওযুর নিয়ম।
ওযুর নিয়ত ও দোয়া: সকল জিনিসের একটা নিয়ত থাকা লাগে ঠিক তেমনিভাবে ওযুর নিয়ত ও থাকা লাগে। তবে তা মুখে জোরে জোরে বলার দরকার নাই, মনে মনে নিয়ত করলেই হবে কারণ আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন অন্তর্যামী। তবে কোনো কোনো হাদিসে ওযুর নিয়তের ব্যাপারে বলা হয়েছে এবং নিম্নে দেওয়া দোয়াটি অধিকাংশ হাদিসে উঠে এসেছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক ওযুর নিয়তে যে দোয়া উচচারণ করা হয় সেটি;
ওযুর নিয়ত:-
উচ্চারনঃ নাওয়াইতু আন আতাওয়াজ্জায়া লিরাফয়িল হাদাসি ওয়া ইস্তিবাহাতা লিছছালাতি ওয়া তাকাররুবান ইলাল্লাহি তা’য়ালা।
অর্থ: আমি ওযুর নিয়ত করছি যে নাপাকি দূর করার জন্য বিশুদ্ধরূপে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্য এবং আল্লাহ তা’য়ালা।
আপনি যদি মনে মনে বাংলায় নিয়ত করে নেন তবেও আপনার ওযু শুদ্ধ হবে। এবার চলুন দেখে নিই ওযুর দোয়া,এ দোয়া পড়ে ওযু করলে আপনার ওযু কবুল হবে এবং আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন সন্তুষ্ট হবেন । তবে অনেকে ওযুর পূর্বের দোয়া বা নিয়ত করেন না ,ওযুর ফরয মেনে ওযু করে নেন। যারা ওযুর ফরয ও সুন্নাত মেনে ওযু করেন তাদের ওযু হবেনা এমন কোনো কথা নেই । তবে ওযুর পূর্বের দোয়া ও নিয়ত পড়লে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন সন্তুষ্ট হোন।
অযুর দোয়া :-
বাংলা উচ্চারণঃ ( আলহামদুলিল্লাহি আলা দ্বীন-ই ইসলাম, আলইসলামু-হাক্কু, ওল কুফরে বাতীলুন, ওল ইসলামু নূরুন, ওল কুফরে জুল্বমাত )
ওযুর নিয়মাবলী:
ওযুর নিয়মাবলীতে ফরয ও সুন্নাত নিয়ম রয়েছে। ফরয মানে আবশ্যক অর্থাৎ যে কাজগুলো আপনাকে অবশ্যই করতে হবে এবং সুন্নাত অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কাজগুলো করতেন। চলুন জেনে নিই ওযুর নিয়ম:
১/ নিয়ত করা
২/ বিসমিল্লাহ বলে অযু শুরু করা
৩/ হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া( হাতের আঙ্গুলের মধ্যে পানি নিয়ে আঙ্গুল গুলো ভালোভাবে ধৌত করা)
৪/ কুলি করা,গড়গড়া করা
৫/ নাকে পানি দিয়ে ভালোভাবে নাক পরিষ্কার করা,নাকের ভেতর এমনভাবে পরিষ্কার করতে হবে যাতে নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি প্রবেশ করে।
৬/ সমস্ত মুখমন্ডল ধৌত করা (ফরয)
৭/ উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা।( ফরয)
৮/ কানের বাহিরের অংশ পরিষ্কার করা। আঙ্গুল দিয়ে প্রতিটা অংশে পানি পৌঁছানো।
৯/ মাথা মাসেহ করা( ফরয)
১০/ টাখনুসহ উভয় পা ধৌত করা। পা ধোয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে পায়ের আঙ্গুল এর প্রতিটা ফাঁকে পানি পৌঁছায়। (ফরয)
উপরে ওযুর নিয়মাবলী দেখানো হয়েছে। ওযুর ফরয ৪ টি যা উপরে নিয়মের ডানপাশে ব্র্যাকেটের ভিতরে লিখে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য নিয়মাবলী বাদ পড়লেও ওযুর ফরয বাদ দেওয়া যাবেনা এতে নিশ্চিতভাবে ওযু ভুল হবে। সুতরাং ওযু করার সময় আমরা এ নিয়মগুলো অবশ্যই মেনে চলবো এবং খেয়াল রাখবো যাতে ওযুর কোনো ফরয বাদ না পরে।
Leave a Reply