
আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ টিকে নিয়ে আলোচনা করব সেটি অষ্টম, নবম এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উপযোগী। এই সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এই ভাব-সম্প্রসারণ টি প্রায়ই পরীক্ষায় এসে থাকে। যেহেতু প্রথম সাময়িক পরীক্ষা থেকে শুরু করে বার্ষিক পরীক্ষায় 5 অথবা 10 নম্বরে ভাব-সম্প্রসারণ থাকে। তাই ভাব সম্প্রসারণ একটা অপরিহার্য অংশ বাংলা ব্যাকরণ এর।
আমরা এখানে চেষ্টা করেছি আপনাদের সেই অনুপাতে ভাব-সম্প্রসারণ তুলে ধরার। আজ আমরা যে ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার্থীদের জন্য। তাই আপনারা বেশি বেশি করে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করেন এবং নতুন নতুন ভাব সম্প্রসারণ পেতে আপডেট থাকুন।
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে/ তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ- সম দহে।
মূলভাব: অন্যায়কারী এবং অন্যায় কে যে প্রশ্রয় দেয় দুজনেই সমান অপরাধী। সত্য ও ন্যায়ের পরাজয় ঘটিয়ে অন্যায় তখনই প্রাধান্য পায় যখন অন্যায়কারী নিজে অন্যায় করে এবং অন্যায় সহ্য কারি অন্যায় সহ্য করে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়। তাই আমাদের সকলের উচিত অন্যায় না করে এবং অন্যায় কে প্রশ্রয় না দেওয়া এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য । সেই সাথে অন্যায় কে প্রতিহত করতে হবে।
সম্প্রসারিত ভাব: বিশ্বের মানব জীবনকে সুন্দর ও সুখকর রাখার জন্য অন্যায় থেকে সকলকে দূরে থাকতে হবে। অন্যায় না করলেই জীবন সত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে থাকে। সমাজকে যারা উৎপীড়ন করে, ব্যক্তির অধিকার কে যারা হরণ করে, আইন-শৃঙ্খলা কে যারা বিঘ্নিত করে তারাই অন্যায়কারী। অন্যায়কারীরা তাই শাস্তিযোগ্য এবং তাদের অন্যায়ের প্রতিফল তাদের অবশ্যই ভোগ করতে হবে।
সমাজের মুষ্টিমেয় মানুষের মধ্যে যেমন রয়েছে অপরাধের প্রবণতা তেমনি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রয়েছে অন্যায় কে মানিয়ে চলার মানসিকতা। তাই শুধুমাত্র অন্যায়কারীকে নয় অন্যায় সহ্যকারীকেও এই দায়ভার বহন করতে হবে।
বিবেকবান মানুষ হিসাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার চেতনার অধিকারী হলেও অনেক সময় মানুষ নানা কারণে দিনের পর দিন অন্যায়কে সহ্য করেন। সরাসরি অন্যায় না করলেও এটি অন্যায়কে সহযোগিতা করার নামান্তর। এতে করে অন্যায়কারী আরো প্রশ্রয় পায়। বস্তুত অন্যায়প্রবণ মানুষ সংখ্যায় কম হলেও এবং সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সঙ্গত মনে করলেও অনেকে বিপদের ঝুঁকি থাকায় নীরবে অন্যায় সহ্য করে চলে। সামর্থ্য থাকুক বা না থাকুক অন্যায় কে সহ্য করা চলবেনা। শক্তি প্রয়োগ সম্ভব না হলেও অন্তত ঘৃণার মাধ্যমে অন্যায় প্রতিরোধ এর উদ্যোগ নিতে হবে।
বর্তমান সমাজে আমরা তাকালেই দেখতে পায় বিভিন্ন গুণীজন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব , রাজনীতিবিদ, ব্যাবসায়িক তারা বিভিন্ন কারণে জেনে অথবা না জেনে বিভিন্ন অন্যায় কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন অথবা করে থাকছেন। আর আমরা সাধারণ জনগণ তা দেখেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করি, কারণ তাদের অর্থের ও ক্ষমতার কাছে আমাদের কিছুই করার থাকেনা। সেক্ষেত্রে বলা যায় তারাও অপরাধী আমারাও অপরাধী । কিন্তু আমাদের হাল ছেড়ে দিলে হবে না আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তাহলে দেশ থেকে অন্যায় দূর হয়ে যাবে।
মন্তব্য: পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, আমাদের সমাজে যারা বিবেকবান ব্যক্তি আছে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। কোথাও কোন অন্যায় কাজ দেখলে তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিহত করতে হবে। না হলে তারাও অন্যায়কারীর মত সম অপরাধী বলে গণ্য হবে। ক্ষমা মানুষের একটি মহৎ গুণ হলেও অনেক সময় অপরাধী ক্ষমা পেলে তার অপরাধপ্রবণতা লোপ না পেয়ে বৃদ্ধি পায়। সে ক্ষেত্রে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন অপরাধী অন্যায় করেও ক্ষমা না পায়।
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আমরা আশা করব উপরের যে ভাব- সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হল নিশ্চয় এতে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে । আপনারা বেশি বেশি করে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আগামীতে শিক্ষাবিষয়ক আরো অনেক সুন্দর সুন্দর বিষয় নিয়ে আলোচনা করব , সেই সাথে নতুন কোন একটি ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে আপনাদের সামনে আবার হাজির হবো।
Leave a Reply