
আপনারা যারা বাংলা ব্যাকরণ এর রচনা পড়তে চান তারা এখনি আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এখানে আপনাদের প্রয়োজনীয় সকল রচনা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আপনার পছন্দ অনুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় রচনাটি আপনারা এখান থেকে পেয়ে যাবেন। কারণ বাংলা ব্যাকরণের অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে প্রবন্ধ রচনা। একটি নির্দিষ্ট নম্বরের এই প্রবন্ধ রচনা বিভিন্ন পরীক্ষায় এসে থাকে। আজকে আমরা যে রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি বিভিন্ন পরীক্ষায় আপনারা দেখতে পাবেন। কথা না বাড়িয়ে আমরা আমাদের মূল রচনায় চলে যাই:
শরৎকাল অথবা বাংলাদেশের শরৎকাল
প্রবন্ধ সংকেত: ভূমিকা; শরতের আগমন; বাংলার কৃষকের কাছে শরৎ; শরতের আকাশ; শরতের প্রকৃতি ও ফুল; শরতের নদী; উপসংহার।
ভূমিকা: ষড়ঋতুর বৈচিত্র্য ধন্য- দেশ বাংলাদেশ। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে 6t ঋতু বাংলার প্রকৃতি কে নতুন নতুন রূপে সাজাতে হাজির হয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে। 6 টি ঋতুর মাঝে শরৎ অন্যতম। গ্রীষ্ম বর্ষা বাসিতের মতো এদুটো চরমভাবাপন্ন নয় সত্যিই কিন্তু এর একটা সৌন্দর্য নয় অবয়ব রয়েছে যা প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে নতুন রূপে।
শরতের আগমন: বাংলাদেশে বর্ষার পরেই শরতের আগমন। ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস শরৎকাল। বর্ষার পরে শরৎকালের আগমন ঋতু পরিক্রমার একটি সাধারণ নিয়ম। ঘনঘোর বর্ষায় কালের প্রবাহ ধীরে ধীরে শরতে প্রবিষ্ট হয়। শরৎকালে প্রকৃতি হয় শান্ত। ক্ষণিকের জন্য মাঝে মধ্যে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়। চারদিকে সবুজের সমারোহ। নদী-বিল বা হাওড়ের স্বচ্ছ পানির বুকে শুভ্র শাপলার মন মাতানো হাসি কিশোর-কিশোরির হৃদয়কাড়া হাসির মতোই মনে হয়।
শরৎকাল আমাদের মাঝে অসাধারণ সৌন্দর্য নিয়ে উপস্থিত হয়। শরতের সকাল আমাদের মাঝে এক অভূতপূর্ব আনন্দময় অনুভূতির সৃষ্টি করে। শরতের সকালে শিশির ভেজা ধান, শিউলী ফুল, কোমল রোদে পুকুরে ভাসমান শুভ্র শাপলার হাসি সব মিলে আমাদের হৃদয়কে উচ্ছ্বসিত করে। আমরা পরম তৃপ্তির সাথে শরতের সকালের এ মিষ্টি আমেজ গ্রহণ করি।
বাংলার কৃষকের কাছে শরৎ: বর্ষার সময় মাঠ-ঘাট ডুবে যায়। অনেক সময় উঠতি ফসলও যাই তলিয়ে। বর্ষার প্লাবনে বাংলার কৃষক কুলকে দিশেহারা করে তোলে। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কৃষককুল অপেক্ষা করে শরতের। শরতের আগমনী আবাদি জমি থেকে বন্যার পানি নেমে যায়। কৃষক নতুন ফসল ফলানোর জন্য জমিতে চাষ দেয়। তাদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে নতুন ফসলের আশ্বাস।
শরতের আকাশ: শরতের আকাশ আমাদের দৃষ্টিকে করে মুগ্ধ, মনকে করে সুনির্মল। বর্ষার আকাশ ছিল মেঘমেদুর। ভারী মেঘের আনাগোনা আর বর্ষণে সূর্যের দেখা মেলায় ছিল ভার। কিন্তু শরতের আগমনে হঠাৎ করে আকাশের রূপ যায় পাল্টে। মেঘের ভেলায় চড়ে উড়ে যেতে চায় স্বপ্ন পিয়াসী মন। দিগন্ত জোড়া নীল আকাশে যখন পাখপাখালি উড়ে যায় খেয়ালি পাখনা মেলে তখন আমাদের নয়ন জুড়িয়ে যায়।
শরতের প্রকৃতি ও ফুল: শরতে বাংলার মাঠে মাঠে দেখা যায় সবুজের বিস্তার। অবারিত মাঠে চাষীদের কর্ম কোলাহল আর সবুজ শ্যামল ফসল মন ভরিয়ে দেয়। শরতের আরেক সম্পদ শিউলি ফুল। শিউলির শুভ্র ছোঁয়ায় যে উন্মাতাল গন্ধ ছুটে তাতে মানুষের মন হৃদয় পাগলপারা হয়ে যায়। বাংলার কবিদের কাব্য শুধায় শিউলির উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। নিসর্গ প্রেমের রোমান্টিক কবি চেতনায় কাশফুলের শুভ্রতা ও যুগে যুগে মুগ্ধতার নাড়া দিয়েছে।
শরতের নদী: উত্তাল নদীর শান্তশ্রী শরৎ প্রকৃতিকে আরো বেশি সৌন্দর্য সুষমা দান করে, নদীর সুতীব্র স্রোত ও ঢেউয়ের উদ্দামতা আসে থেমে। মৃদু স্রোত নিয়ে শান্ত নদী সমুদ্রের সাথে আলিঙ্গনাবদ্ধ হতে বয়ে চলে নিরবধি। শান্ত নদীর বুকে ঝলমলে বিকেল বেলা মাঝি বেয়ে চলে তার পালতোলা নৌকা। নদীর প্রশান্ত বুকে দুধেল বলাকার ঝাঁক উড়ে যায়। সীমাহীন মুক্ত আকাশের নিচে মৃদু-মন্দ সৃষ্টি হয় এক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের আবহ। স্থির পুকুরে পদ্ম পাতা অফুটন্ত ফুল দৃষ্টিকে থমকে দেয়।
উপসংহার: ঋতুচক্রের ধারায় একটি বর্ষণমুখর সন্ধ্যার পর বাংলার প্রকৃতিতে হাজির হয় শরৎকাল শরতের আকাশ সাতক্ষীরার সবুজ শ্যামল নিসর্গ ও নদীর স্রোত ত্রিনয়ন মনোহর শরতের প্রভাব বাঙালি জীবনের প্রকৃতির এক অনুপম আশীর্বাদ রুদ্ধশ্বাস জীবনে মুক্তির খোলা বাতায়ন।
Leave a Reply