আমাদের এই ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত জানাই। আপনারা সবাই অবগত আছেন বিশ্ব আজ বৈশ্বিক মহামারীর ভিতর দিয়ে পার করছে। এর প্রভাব এসে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। করোনার প্রাদুর্ভাব দিনে দিনে বেড়ে যাওয়াতে শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সবাই অনলাইনে ক্লাসের প্রতি জোর দিয়েছে।
আমাদের এই ওয়েবসাইট একটি অনলাইন ভিত্তিক ওয়েবসাইট এখানে শিক্ষার বিষয় গুলো নিয়ে কাজ করা হয়ে থাকে। এতে করে শিক্ষার্থীরা যেমন একদিকে পাঠ্যপুস্তক এর পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে যে সুবিধা পাচ্ছেন অন্যদিকে তাদের পড়াশোনার গতি তাকেও তারা ঠিক ভাবে চালিয়ে নিতে পারছেন।
আমরা আজকে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ব্যাকরণ অংশের ভাব-সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করব। আজ যে ভাব সম্প্রসারণ করে নিয়ে আলোচনা করব সেটি আমরা নিচে তুলে ধরলাম:
ভাব সম্প্রসারণ:
উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,
ভয় নাই ওরে ভয় নাই
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান,
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।
মূলভাব: সীমাবদ্ধ জীবনের অবসান ঘটিয়ে মানুষকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়। কারণ মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। পেছনে পড়ে থাকে তার কর্মফল। পার্থিব জীবনে যারা সৎকর্ম করে দেশ ও দশের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করে তাদেরকে মানুষ মরে যাওয়ার পরও ভোলে না। অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারলেই জীবন সুখময় ও আনন্দময় হয়ে ওঠে। এমন ব্যক্তি মানবসমাজের ধন্য বলে বিবেচিত।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যুবরণ করে। মানুষের মৃত্যুর পর স্বভাবতই তাকে আর কেউ মনে রাখে না। জন্ম ও মৃত্যুর এই মাঝামাঝি সময়ে মানুষ যে সময়টুকু পৃথিবীতে অবস্থান করে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ের কর্মফলই তার পরিচয়কে সুস্পষ্ট করে।
মানবজীবন শুধু ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয় তার সাথে জড়িয়ে আছে সার্বজনীন স্বার্থ। ব্যক্তিস্বার্থের দিকটি ক্ষুদ্র, সীমিত, গন্ডিবদ্ধ বলে তা কখনো দেশ ও দশের উপকারে আসে না। তাই ব্যক্তি স্বার্থের জন্য মানুষ যা করে তার নিরর্থক নিষ্ফল। যে ব্যাক্তি দেশ ও দশের জন্য কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে মৃত্যুর পরও তাঁর সৃষ্ট সোনার ফসল টিকে থাকে। তাই সবার স্বার্থে আত্মনিয়োগ করতে পারলে জীবন হবে সার্থক ও সফল।
জীবনে মানুষ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট হয়। এই প্রতিবন্ধকতাকে রুখতে তাদের নানা আয়োজন, উদ্যোগ চোখে পড়ে। লক্ষ্যকে পূরণ করতে গিয়ে কেউ বেছে নেয় অন্যায়ের পথ। ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে তারা নিতান্ত আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। জীবনাবসানকালে পৃথিবীর বুকে তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়। জীবনে ও মরণে উভয় কালেই তারা ঘৃণিত।
অন্যদিকে যারা সৎ কাজ করে, মানবকল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয় তারা স্থান পায় গৌরবময় ইতিহাসের পাতায়। যুগে যুগে যেসকল মানুষ আত্মত্যাগ করে গেছেন তারা হয়েছেন মহামানব। এসব মহামানব সকল ভয়-ভীতি, বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে জয় করেছেন। তাঁদের দেখানো পথ সকল অন্ধকারকে দূরে ঠেলে দিয়েছে আলোর সন্ধান। মানব মুক্তির জন্য তারা দ্ব্যর্থহীন চিত্তে কাজ করে গেছেন।
চে গুয়েভারা, নেলসন ম্যান্ডেলা, আব্রাহাম লিংকন প্রমুখ ব্যক্তিগণের অবদান চিরদিন পৃথিবীর বুকে লেখা থাকবে তাঁদের আত্মত্যাগের জন্য। সংকট উত্তরণে এসব মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছিল, ভবিষ্যতেও ঘটবে। সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে সামান্য একটু কাজই বদলে দিতে পারে জনসাধারণের সাধারণ জীবনপরিচয়। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে ভয়-ভীতিকে বিসর্জন দিয়ে দ্বিধাহীন চিত্তে যাঁরা নিঃশেষ জীবন দান করতে পারেন তারাই সভ্যতার অগ্রগামী পথিক।
মন্তব্য: জীবনে সফলতা অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো উত্তম পথটি নির্বাচন করা। মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করাই হলো সেই উত্তম পথ। তাই আমাদের মানবকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করা উচিত।
উপরে যে ভাব সম্প্রসারণটি নিয়ে আলোচনা করা হল আশা করছি শিক্ষার্থীদের অনেক উপকারে আসবে। কারন আপনাদের উপকারে আসলেই আমাদের কাজের সার্থকতা। সেজন্য আপনারা বেশি বেশি করে আমাদের এই ওয়েবসাইটে মতামত প্রদান করবেন যাতে আমাদের কোনো ভুল-ভ্রান্তি হলে অবশ্যই আমরা সেটা শুধরে নিতে পারব।
Leave a Reply