শরীরের জন্য অপরিহার্য ভিটামিন ডি। তবে সেটা শরীরের ভেতরে উৎপন্ন হয়ে থাকে। এর পর্যাপ্ত মাত্রা শরীরের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে আসে। এছাড়াও এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ভিটামিন ডি বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। এমনকি হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকেও সহজ করে তোলে ভিটামিন ডি।
ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ত্বকের সুস্থতা ধরে রাখতে এমনকি ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধেও উপকারী। এটি শরীরের পেশী কে শক্তিশালী করতে বেশ সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে ভিটামিন ডি এর উপকারিতা অনেক বেশি। সাধারণত খাবার ও সকালের রোদ থেকে ভিটামিন টি পাওয়া সম্ভব। তবে অনেকেই সকালের রোদ শরীরে লাগাতে পারে না।
অন্যদিকে পুষ্টিকর খাবার না খেলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি শরীরে মিলে না। তাই এই ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় অনেকের শরীরে। আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করতে এসেছি ভিটামিন ডি এর অভাবে আমাদের কি হতে পারে সেই সম্পর্কে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয় সে সম্পর্কে।
ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ
সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর অন্যতম প্রধান উৎস। আমরা যদি সকাল-সকাল ঘুম থেকে উঠে সকালের রোদটা উপভোগ করতে পারি তাহলে আমাদের শরীরে ভিটামিনটি এর কোন অভাব থাকার কথা নয়। অনেক সময় আমরা ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়ম ভাবে খেতে পারি না তাই আমাদের সবথেকে ভালো উপায় হলো সকাল সকাল সূর্যের আলো গায়ে লাগানো।
শীতকালে অনেকের শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ সময় দেহে ক্যালসিয়ামের বিভাগ যথাযথ বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিটের সরাসরি সূর্যলোক প্রয়োজন। শরীরের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেই লক্ষণগুলো সম্পর্কে আমরা এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত লক্ষণ
আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব থেকে থাকে তাহলে হঠাৎ করে চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। হার এবং পেশীতে দুর্বলতা এবং ব্যথা অনুভব করা অস্থিতির সন্ধিগুলির বিকৃতি হওয়া এছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথা ভিটামিন ডি এর ঘাটের সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।
আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর মাত্রা কমে যায় তাহলে শরীরে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ দেখা দিতে পারে যা ঘন ঘন মেজাজ এর পরিবর্তন ঘটাতেও পারে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ভালোভাবে বিশ্রাম নিয়েও যদি আপনি অলস এবং ক্লান্ত বোধ করেন তবে এটি ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে হতে পারে।
স্থলকাই ব্যক্তিদের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ মেঘ বহুল কোষগুলো শরীরে ভিটামিন ডি নিঃসরণে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। যার কারনে তাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পাওয়া যায়। আবার হঠাৎ ওজন কমতে থাকা শরীরের জন্য ভালো লক্ষণ নয় ঠিক মতো খাওয়া দাওয়ার পরও ওজন কমা ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে।
আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব থেকে থাকে তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে এছাড়াও আপনার শরীরে যদি কোন ঘা থেকে থাকে তাহলে সেই ঘাস শুকাতেও অনেকটাই সময় লেগে যায় শুধুমাত্র ভিটামিন ডি এর অভাবে।
আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকলে অকারণে ক্লান্তি ভাব ঝিমুনি এবং শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছে হতে পারে। কার শরীরে কতটুকু ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন তা নির্ভর করে বয়স অনুযায়ী। পূর্ণ বয়স্ক মানুষদের দৈনিক ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি এবং এক হাজার মাইক্রগ্রাম ক্যালসিয়াম এর চাহিদা থাকে।
তবে অন্যদিকে সত্তর এর বেশি বয়স যাদের রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১২০০ মাইক্রো গ্রাম। বয়স অনুপাতে ভিটামিন ডি এর ডিমান্ড ২৫ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম হতে পারে। তাই অলসতা দূর করে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আমাদের প্রত্যেকের উচিত সকালে রোদ উপভোগ করা। কারণ সকালে রোদ থেকে আমরা আমাদের শরীরে প্রয়োজনমতো ভিটামিন ডি পাব।
Leave a Reply