আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা হল জনসংখ্যা প্রবলেম এবং আমাদের যত বড় ভূখণ্ড তার চাইতে অনেক বেশি পরিমাণ জনসংখ্যা হওয়ার কারণে দিনে দিনে আমাদের দেশের প্রত্যেকটি জায়গায় মানুষের বসবাস বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি পারিবারিকভাবে একজন ব্যক্তি যখন তাদের সন্তানদেরকে ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন না অথবা ঠিকভাবে মানুষ করার জন্য সময় দিতে পারছেন না তখন সেখান থেকে অনেক খারাপ ফলাফল চলে আসছে।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে এবং আমাদের পরিবেশ সুন্দরভাবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় এবং এটা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা আমাদের পৃথিবী থেকে সুন্দর করে তুলতে পারি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের প্রত্যেক বর্গ কিলোমিটারে যতজন মানুষ বাস করে তার চাইতে বহু গুণে বেশি মানুষ বাস করে আমাদের বাংলাদেশে। তাই এই ক্ষেত্রে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক অথবা জনসংখ্যা বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রদান করার জন্য পরিবার কল্যাণ সহকারীর কাজ কি তা আপনাদের উদ্দেশ্যে আলোচনা করলাম।
আপনি যদি একজন পরিবার পরিকল্পনা সহকারী হিসেবে যোগদান করতে পারেন তাহলে আপনাকে এখানে বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব পালন করা লাগবে এবং এর ভেতরে প্রধান দায়িত্ব পালন করার বিষয় হল জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি গিয়ে আপনাদেরকে খোঁজ রাখতে হবে যে আসলে তারা কোন ধরনের কাজ করছে এবং তাদের আয়ের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবন খুব সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা। যদি তাদের আয়ের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় তাহলে তার সঙ্গে সামাজিক অবস্থার সঙ্গে মিল রাখার জন্য কতটি সন্তান নিলে সবচাইতে ভালো হবে এ বিষয়গুলো তারা অবগত করবে।
একজন মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সন্তান নেওয়ার ঠিক কতদিন পরে দ্বিতীয় সন্তান নেওয়া যাবে অথবা পরবর্তী সন্তান নেওয়া যাবে এ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা প্রদান করা এবং সেই অনুযায়ী স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করাই একজন পরিবার কল্যাণ সহকারীর কাজ। এছাড়াও একজন পরিবার কল্যাণ সহকারীর বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে এবং আপনাদের উদ্দেশ্যে এখানে তা আলোচনা করলাম।
একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে আপনাদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন সক্ষম দম্পতিদের তথ্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং বর্তমানে এই তথ্য রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে আপনারা সরকারি ভাবে তথ্য গুলো উপস্থাপন করতে পারবেন। এই ই রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করলে সারা বাংলাদেশে কতজন দম্পত্তি রয়েছে তার একটা হিসাব চলে যাবে এবং এই অনুযায়ী পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও দম্পতিদের গিয়ে পরিবার পরিকল্পনা বা কল্যাণ সহকারী হিসেবে আপনারা বিভিন্ন ধরনের মটিভেশন প্রদান করবেন এবং সন্তান নেওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা তাদেরকে প্রদান করতে পারবেন। গর্ভবতী রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং এর মাধ্যমে একটা দেশে কতজন গর্ভবতী নারী আছে এবং তাদের সন্তান সুষ্ঠুভাবে প্রসব করতে পারছেন কিনা সে বিষয়গুলো দেখতে হবে।
গর্ভকালীন অবস্থায় একজন মায়ের যে ধরনের সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন সে বিষয়গুলো সম্পর্কে সকলকে অবগত করাটাও একজন পরিবার কল্যাণ সহকারীর কাজ এবং এক্ষেত্রে তিনি যদি এই সকল সেবা প্রদান করে আসেন তাহলে একজন মানুষ নিজেকে সচেতন রাখতে পারবেন এবং সুষ্ঠুভাবে তার দায়িত্ব গুলো পালন করতে পারবেন।
অত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে যারা প্রসব বেদনা উঠলে শহরের পর্যায়ে চলে যায় অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে তাদেরকে সাহস প্রদান করার পাশাপাশি গর্ভকালীন সেবা প্রদান এবং বেদনা উঠলে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করাটাই একজন পরিবার কল্যাণ সহকারীর কাজ। তাছাড়া নিরব প্রসব সেবা এবং প্রসব করার পরবর্তী সেবা প্রদান করবেন একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শিশু জন্মগ্রহণের করার পর তাদের তথ্যগুলো রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং ইপিআই কেন্দ্র সেবা প্রদান করার পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা প্রদান করার জন্য এ বিষয়গুলো তাদেরকে জানিয়ে দেবে। তাই একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে আপনারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে থেকে সরাসরি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন ধরনের টিকাদান কর্মসূচি চালু করবেন এবং মাতৃ মৃত্যু রোধ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করবেন।
Leave a Reply