যারা সার্টিফিকেট নাম সংশোধন করার নিয়ম জানতে চান তারা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এই নিয়ম নির্ভুলভাবে এবং বিস্তারিত ভাবে জেনে নিতে পারবেন। তাই আপনার সার্টিফিকেটে নাম যদি সংশোধন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে আপনারা এই পোষ্টের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট এর সকল ধরনের সংশোধন মূলক কাজ করতে পারবেন।
যাদের সার্টিফিকেটে নাম ভুল এসেছে তাদের জন্য এটি খুবই একটি বড় ধরনের সমস্যা। তবে অনেকে আছেন যারা অতটা গুরুত্ব প্রদান না করে দিনের পর দিন এভাবে বসে থাকে এবং যখন সার্টিফিকেট কাজে লাগে, তখন আপনারা বিভিন্ন জায়গায় যান এবং সার্টিফিকেট ঠিক করার জন্য অনেক টাকা নষ্ট করেন। তবে সার্টিফিকেট সংশোধন করার ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলা আছে এবং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া হতে পারে। তবে আপনি যদি আমাদের পোস্ট এর এই নিয়মগুলো অনুসরণ করেন তাহলে 30 থেকে 90 দিনের মধ্যে সার্টিফিকেটের নাম সংশোধন করতে পারবেন। শুধু সার্টিফিকেটের নাম নয় বরং অভিভাবকের নাম আপনারা যদি সংশোধন করতে চান তাহলে এই পোস্ট অনুসরণ করুন।
আপনার যদি জরুরি ভিত্তিতে সার্টিফিকেট সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনারা তার নিজের থেকে সংশোধন করার চেষ্টা করুন। এতে আপনারা টাকার দিক থেকে যেমনটা লাভবান হবেন ঠিক তেমনিভাবে নির্ভুলভাবে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে পারবেন। তাছাড়া অন্যের মাধ্যমে অথবা দালালের মাধ্যমে আপনারা যদি সার্টিফিকেট সংশোধন করতে চান তাহলে আপনাদের বেশি দিন সময় লেগে যেতে পারে। তার চাইতে আপনারা নিজেদের কাজ নিজেরা করুন এবং দ্রুত সময়ে সার্টিফিকেট সংশোধন করে নিন।
নিচের সার্টিফিকেট সংক্রান্ত প্রত্যেকটি তথ্য নির্ভুলভাবে আপনাদের জন্য প্রদান করা হলো। তাছাড়া নিচে যে সকল কাগজপত্র এর কথা বলা হয়েছে সে সকল কাগজপত্র আপনারা সবসময় নির্ভুলভাবে সংগ্রহ করবেন এবং তা ব্যবহার করবেন।
আপনি যদি সার্টিফিকেট সংশোধন করতে চান তাহলে সবার প্রথমে আপনাকে করতে হবে এফিডেভিট। আপনার নিকটস্থ এডভোকেট এর কাছ থেকে আপনারা নোটারি বা এফিডেভিট করে নিবেন। যদি আপনার বয়স 18 বছরের উপরে হয়ে থাকে তাহলে আপনারা এই এফিডেভিট নিজেরাই করতে পারবেন এবং এফিডেভিট করার ক্ষেত্রে কি কি করা লাগবে তা আপনারা অ্যাডভোকেট সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। এফিডেভিট করার ক্ষেত্রে আপনাদের 500 থেকে 1000 টাকা লাগতে পারে এবং স্থান বিশেষে হয়তো কমবেশি হতে পারে। তবে আপনি যদি কমে নিতে পারেন সেটা আপনার জন্য লাভজনক।
তারপরে সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য আপনারা পত্রিকায় পারে একটি বিজ্ঞাপন দিবেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে আপনাদের হয়তো কয়েক শ’ টাকা খরচ হতে পারে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে গেলে আপনারা এই বিজ্ঞাপনের কাটিং এবং এফিডেভিট বা নোটারিরর কাগজ নিয়ে চলে যাবেন আপনাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলে আপনারা প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়ে অবহিত করবেন এবং তাকে আপনার সার্টিফিকেট পরিবর্তন প্রসঙ্গে অনুরোধ জানাবেন। প্রধান শিক্ষক সম্মত হয়ে গেলে আপনারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার অপারেটর এর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং তাকে এই কাজটি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন।
আপনাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে কম্পিউটার অপারেটর রয়েছে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইএনএনআই ব্যবহার করে জাতীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন এবং সেখানে আপনার যে সকল ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলো স্ক্যান করে একটি আবেদন দাখিল করবেন। আবেদনপত্রে আপনার সার্টিফিকেট সংশোধন করা প্রসঙ্গে একটি সাবলীল ও মার্জিত ভাষায় আবেদনপত্র লিখতে হবে এবং আবেদনপত্র যদি আপনারা আগে থেকে লিখে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে সেটি কম্পিউটার অপারেটরের জন্য অনেক সুবিধা হবে।
তারপরে আপ্নারা আপনাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কম্পিউটার অপারেটরকে দিয়ে দেবেন। যদি আপনার সার্টিফিকেট নাম সংশোধন করার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনারা যদি 18 বছরের উপরে হয়ে থাকেন তাহলে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিবেন। আর যদি আপনার বাবা-মায়ের সার্টিফিকেট নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় তাহলে তারা তাদের পরিচয় পত্র বা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করবেন। অবশ্যই আপনাদের এক্ষেত্রে এফিডেভিট এবং পত্রিকার কাটিং নিয়ে যেতে হবে এবং এই কাগজগুলোও স্ক্যান করে দিতে হবে।
আপনারা যখন কম্পিউটার অপারেটরের মাধ্যমে এ সকল কাজ সম্পাদন করবেন তখন আবেদন করার সাথে সাথে আপনাদের একটি স্লিপ নাম্বার দিয়ে দেওয়া হবে। তাছাড়া আপনারা সেই স্লিপ ডাউনলোড করে নিয়ে নিকটস্থ সোনালী ব্যাংকে প্রতি সার্টিফিকেটের জন্য 558 টাকা ফি প্রদান করতে হবে। আপনার যদি এসএসসি এবং এইচএসসি অর্থাৎ দুই সার্টিফিকেট এই কোন ধরনের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনাদের দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হবে। আপনি যখন কম্পিউটার অপারেটরের মাধ্যমে আবেদন করবেন তখন সকল তথ্য প্রদানের পাশাপাশি আপনাকে ফোন নাম্বার দিতে হবে এবং এই ফোন নাম্বারের মাধ্যমে আপনারা সকল তথ্যের হালনাগাদ বা এসএমএস পাবেন।
আপনি যখন সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা প্রদান করবেন তখন আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে কনফার্মেশন জানানো হবে। তারপরে আপনার ফোনে কিছুদিন পরেই একটি এসএমএস আসবে এবং আপনারা সেই এসএমএসের মাধ্যমে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড পাবেন। তখন আপনি জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন এবং সেখানে প্রবেশ করে আবার যে সকল তথ্য চাওয়া হবে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করবেন। সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পাশাপাশি আপনারা কিছুদিন অপেক্ষা করবেন এবং কিছুদিন পরে আপনাদের কে আবার এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে এর হালনাগাদ কতটুকু হয়েছে।
তখন আপনারা আবার জাতীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে তথ্যের হালনাগাদ করণ নামক একটি অপশন এ প্রবেশ করবেন এবং সেখানে গিয়ে আপনারা সার্টিফিকেটের কতটুকু তথ্য হালনাগাদ হয়েছে তা দেখে নিতে পারবেন। সেইসাথে তথ্যের হালনাগাদ দেখে নেওয়ার পাশাপাশি সেই সংশোধনী সার্টিফিকেটের কপি আপনারা প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। তাই আপনারা আপনাদের প্রয়োজনে সংশোধনী সার্টিফিকেটের কপি প্রিন্ট করে নিবেন এবং সেখান থেকে আবারও আপনাদের টাকা প্রদান করতে হবে। একটি সার্টিফিকেট এর জন্য ৫৫৮ টাকা এবং দুইটি সার্টিফিকেটের জন্য তার দ্বিগুণ টাকা প্রদান করতে হবে আবার সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে।
এবার আপনারা আপনাদের যত পরিমাণ টাকা প্রদান করেছেন এবং এই টাকা প্রদানের যত রশিদ রয়েছে সেগুলো আপনারা সাথে নিবেন এবং অন্যান্য কাগজপত্র নিবেন। অন্যান্য কাগজপত্রের ভেতরে থাকবে জাতীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে ডাউনলোড করে নে আমার সংশোধনী সার্টিফিকেট এর প্রিন্ট, আপনার আগের সার্টিফিকেটের অরিজিনাল কপি এবং টাকা পেমেন্ট করার যত স্লিপ হয়েছে সবগুলো।
এসকল কাগজ নিয়ে আপনারা আপনাদের যে শিক্ষা বোর্ড থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন সে শিক্ষা বোর্ডের অফিসে চলে যাবেন। এক্ষেত্রে আপনারা জেলা শিক্ষা বোর্ডের অফিসে চলে গেলেও কাজ হবে। তারপরে সেখানকার কর্মরত যেসকল সম্মানীয় ব্যক্তি রয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং আপনার সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য তাদেরকে অনুরোধ করবেন। আপনার প্রত্যেকটি কাগজ যখন নির্ভুলভাবে প্রদান করা হবে এবং সকল ডকুমেন্ট যখন আপনি সঠিকভাবে দেখাতে পারবেন তখন আপনাকে হয়তো দিনের দিন অথবা দুই এক দিনের ভেতর সময় নিয়ে সার্টিফিকেটের অরিজিনাল কপি প্রদান করা হবে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করলেই আপনার সার্টিফিকেটে আপনার নিজের নাম অথবা মা- বাবার নাম পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। মানুষ মাত্রই ভুল। তার পরেও আপনাদেরকে আমরা যথাসাধ্য নির্ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি এবং এই তথ্যগুলো অনুসরণ করলে আশা করি আপনাদের পরিশ্রম বিফলে যাবেনা। তাই দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কিত এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংক্রান্ত যে কোন তথ্যের প্রয়োজনে আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।
Leave a Reply